মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছুরিকাঘাতে নোমান আহমদ (৩৮) নামের এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। নোমান সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার বাড্ডা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নোমান উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের রাঙ্গিনগর গ্রামের লেচু মিয়ার ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, “শনিবার সন্ধ্যা রাতে নোমান বাড্ডা বাজারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় হঠাৎ দুই যুবক এসে নোমানের বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে নোমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কী কারণে নোমানকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।”

শহীদ আরো বলেন, “ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই যুবক পালিয়ে গেছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানতে পেরেছি। তারা হলেন- সুজানগর ইউনিয়নের দশঘরি গ্রামের সবির মিয়ার ছেলে মারজান আহমদ ও কালাইউরা গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে রেহান আহমদ।”

সুজানগর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সাবুল আহমদ বলেন, “সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা নোমান আহমদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে মারজান আহমদরা। নোমান দীর্ঘদিন ধরে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তাঁর এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে রাতেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নোমানকে অভিযুক্তরা ছুরিকাঘাত করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করি হচ্ছে। এছাড়া হত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সেটি নিয়েও তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/আজিজ/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বদল র ন আহমদ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের আগে সিলেটের জাফলংয়ের পাথর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কবজায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর রাজত্ব বদলেছে। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীর হাতে এখন পাথর কোয়ারির চাবি। ইজারা স্থগিত থাকলেও রাতদিন বোমা মেশিন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাথর তোলা থেমে নেই। গত ৫ আগস্টের পর ৯ মাসে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বালু পাথর লুট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানিয়েছে।

লুটের অভিযোগে একাধিক নেতাকর্মী দলের পদ পদবি হারালেও এ পথ থেকে তারা ফিরছেন না। থানায় মামলা করেও দমানো যাচ্ছে না তাদের। সর্বশেষ শনিবার সরকারের দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ে পরিদর্শনে গেলে তাদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ভিডিও ফুটেজে যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের একাধিক নেতাকেই ঘটনাস্থলে দেখা যায়।

শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) পরিদর্শনে যান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে একদল মানুষ পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে উপদেষ্টাদের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, যুবদল নেতা সুমন আহমদ ও শ্রমিক দলের দেলওয়ার হোসেনকে দেখা যায়। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদসহ আরও কয়েক নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

পরিদর্শন শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে। এ রকম জায়গায় আমরা আর পাথর তোলার অনুমতি দেব না। এখানকার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছি। পরে বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলার কারণে পরিবেশের ধ্বংস হচ্ছে। আপাতত পাথর তুলতে দেওয়া হবে না।

গাড়িবহরে বাধার বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, হঠাৎ কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে।

শুরুতে জাফলং নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাটের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর রফিকুল ইসলামের দলীয় পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সর্বশেষ ৯ জুন জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল। বালু ও পাথর তোলার দায়ে গত ২৫ মার্চ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেকে দলের নাম ভাঙিয়েও অপরাধ করছে।

আজিরের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে বাধা প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দ্রুত ইসিকে জানান, সরকারকে সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজীপুরে এখনো করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়নি
  • সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা, আসামি ১৫৯
  • জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে বাধা: ১৭ বিশিষ্ট নাগরিক ও ১৯ সংগঠনের নিন্দা
  • আপেল মাহমুদ অথবা রবিঠাকুরের কাদম্বিনীর গল্প
  • বালু ব্যবসার নামে প্রতারণা কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা
  • জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন জামায়াতের আমিরের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ: সালাহউদ্দিন আহমদ