রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদের উপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

রাবির অন্যতম সমন্বয়ক রাশেদ রাজন বলেন, “রাষ্ট্র সংসারে ভূমিকা পালন করা যোদ্ধাদের উপর ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় হামলার হুমকি-ধামকি আসছিল। এ সিস্টেমকে যারা পরিবর্তন করতে চেয়েছে, রাষ্ট্র সংস্কারে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, তাদের উপর পূর্বপরিকল্পিত হামলার ষড়যন্ত্র চলছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ আমরা কালকে রাতে দেখেছি।”

তিনি আরো বলেন, “একজন সামনের সারির যোদ্ধার ওপর হামলা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অতিদ্রুত এর বিচার করতে হবে। বিচার না হলে আগামীর যে সম্প্রীতি, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”

স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজিব বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ক্রান্তিকালে শত শত শিক্ষার্থীকে ডেকেছিলাম আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তার মধ্যে যে ১৭ জন সাড়া দিয়েছিলেন, তাদের একজন নুরুল ইসলাম শহীদ। তিনি ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করতে জীবন বাজি রেখে আমাদের সঙ্গে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। যারা এ ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভেঙে ফেলতে ভূমিকা রেখেছিলাম, তাদের জন্য এটি একটি বার্তা হতে পারে।”

তিনি আরো বলেন, “যারা নুরুল ইসলাম শহীদের ওপর হামলার মত ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তাদের অবিলম্বে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনুন। যারা জুলাই বিপ্লবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা আপনারা নিশ্চিত করুন। আপনারা যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, এভাবে নুরুল ইসলাম শহীদরা যদি আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে আপনাদের চেয়ারও কিন্তু বেশিদিন টিকে থাকবে না। আপনাদের চেয়ারের মেয়াদ আমাদের নিরাপত্তার ওপর নির্ভর করছে।”

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে রাজশাহী নগরের হেতেম খাঁ এলাকায় রাবি সমন্বয়ক নুরল ইসলাম শহীদের ওপর ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত্ব অতর্কিত হামলা করে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমন বয়ক র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’