পিরোজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত
Published: 22nd, January 2025 GMT
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম সকাল ১০টায় এ উৎসব উদ্বোধন করেন। এ সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তারা শিক্ষার্থীদের চমৎকার এ আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রঙিন শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে স্টলে স্টলে নানা ধরনের পিঠা সাজিয়ে নিয়ে বসেছে। পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পিঠা উৎসব প্রাঙ্গণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের চারটি স্টলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা প্রায় ৩৫ ধরনের ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন।
এর মধ্যে রয়েছে- ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, পাটিসাপটা, মালপোয়া, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, সরভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাকান পিঠাসহ আরও বাহারি সব নামের পিঠা।
উদ্বোধনের পর বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “পিঠা উৎসব বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ধারণ করে এবং শীতের গতি প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন স্বাদের পিঠা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ও স্বাদের পিঠা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের এ উৎসবে অংশগ্রহণ তারই প্রমাণ।”
তিনি বলেন, “আজকের পিঠা উৎসব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
ঢাকা/তাওহিদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’