উদিত নায়রায়ণের চুমুতে বহুবার অপ্রস্তুত হয়েছেন গায়িকা অলকা-শ্রেয়া
Published: 3rd, February 2025 GMT
নারী ভক্তের ঠোঁটে চুমু খেয়ে দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েছেন বলিউডের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী উদিত নারায়ণ। এ মুহূর্তের একটি ভিডিও এখন অন্তর্জালে ভাইরাল। সমালোচনার মুখে ঊনসত্তরের এ গায়ক দাবি করেছেন— কেউ তাকে কলঙ্কিত করতে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়েছে। চুমু খাওয়াতে কোনো পাপ দেখছেন না এই গায়ক।
নারী ভক্তের ঠোঁটে চুম্বন করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামনে এসেছে উদিত নারায়ণের চুমু খাওয়ার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও। এসব ভিডিওকে কেন্দ্র করে উদিত নারায়ণের একাধিক চুমু কাণ্ড আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে এ তালিকায় অনুরাগীরা নন বরং প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিক, শ্রেয়া ঘোষালকে পাওয়া গেছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে গান গাইছেন অলকা ইয়াগনিক। হঠাৎ উদিত নারায়ণ তার গালে চুমু খান। আকস্মিক এমন ঘটনায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন অলকা। দ্রুত সরে যান এই গায়িকা। আরেকটি ভিডিওতে অলকাকে আচমকা চুমু খান উদিত নারায়ণ। এ মঞ্চেও যে গায়িকা এমনটা আশা করেননি, তা তার চোখ-মুখের অভিব্যক্তিতে স্পষ্ট।
আরো পড়ুন:
অর্ধ-নগ্ন ছবি নিয়ে মুখ খুললেন সন্ন্যাসিনী মমতা
ছয় বছর পর অক্ষয়ের সেঞ্চুরি
বেশ কয়েক বছর আগে ‘জাব তাক হ্যায় জান’ সিনেমার গান গাওয়ার জন্য সেরা সংগীতশিল্পী (নারী) বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন শ্রেয়া ঘোষাল। নাম ঘোষণার পর তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন মালাইকা অরোরা। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উদিত নারায়ণও। শ্রেয়া মঞ্চে উঠার পরই উদিত নারায়ণ আচমকা তাকে জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খান। প্রবীণ গায়কের এমন আচরণে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন শ্রেয়া। যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দেন এই শিল্পী।
অলকা ও শ্রেয়াকে চুম্বন করার ভিডিও নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার পর উদিত নারায়ণকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (টুইটার) হেনা নামে একজন লেখেন, “উদিত নারায়ণ, এটা খুবই বাজে ব্যবহার।” আরেকজন লেখেন, “এই ঘটনায় উনি (শ্রেয়া) স্পষ্টতই অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। তবে সেটা হেসে উড়িয়ে দেন।” আরো একজন লেখেন, “যে আচরণ দেখানো হয়েছে, সত্যি তা গ্রহণযোগ্য নয়।” অন্যজন লেখেন, “অলকাকে বেশ অসন্তুষ্টই মনে হলো। এ ধরেন হেনস্তা বন্ধ করুন উদিত। অসুস্থ!” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
খাতার পেজ ছিড়ে ফেলা, মার্ক টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেছেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যানের হুর-ই-জান্নাত জ্যোতির পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ওই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে ওই বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে হেনস্তা কারার প্রতিবাদে ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীবকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন আরেকদল শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার বেলা ১টার দিকে অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের বিরুদ্ধে খাতার পেজ ছিড়ে ফেলা, মার্ক টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রশাসন ভবনের সমানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ওই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে ‘আমার খাতার পেজ গেল কই?’, ‘মার্ক টেম্পারিং এর বিচার চাই’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিচার চাই, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন তারা।
পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে অ্যনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে হেনস্তা কারার প্রতিবাদে ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীবকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন আরেকদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
এ সময় প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন তারা। খবর পেয়ে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে এসে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।
গত ২১ মার্চ ওই বিভাগের ১৫ জন শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর ওই বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ, মানসিক হেনস্তা এবং পছন্দের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন আনিসুর রহমানকে সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম গোলাম হায়দারকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, কৃষি অনুসদের ডিম জুলহাস আহমেদ জুয়েল, প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব, ছাত্র উপদেষ্টা মো. বদরুল ইসলাম, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মানসুরা খানম, কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের সরকারি অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম। এই কমিটি পাঁচটি বৈঠক সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সর্বশেষ বৈঠক করেছেন তারা।
সোমবার তদন্ত কমিটির সভায় অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে তদন্ত কমিটির সদস্য ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাত।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অ্যানিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান হুর-ই-জান্নাত জ্যোতি শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ, পরীক্ষার উত্তরপত্রের ভেতর থেকে চার থেকে পাঁচটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে সাদা কাগজ ঢুকিয়ে দেওয়া, অন্য কোর্সের শিক্ষকদের থেকে মার্ক না নিয়ে নিজের ইচ্ছা মত ফলাফল প্রকাশ, পরীক্ষার আগে পছন্দের শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। এসব অভিযোগের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মার্জিয়া আফরোজকে প্রোটোজ্যুলজি ও টক্সিকোলজি কোর্সের পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ওই কোর্স দুইটির কয়েকটি উত্তরপত্রের মধ্যে পেজ ছেড়া পান। দ্বিতীয় পরীক্ষা হিসেবে ওই শিক্ষক লার্জ অ্যানিম্যাল মেডিসিন ও ডেইরি কেমিস্ট্রিয়ান মাইক্রোবায়োলজি কোর্সের কয়েকটি উত্তরপত্র মধ্যে চারটি করে পেজ ছেড়া দেখতে পান। এ বিষয়ে আরজে আফরোজ উপাচার্য বরাবর লিখিতভাবে জানান।
অবস্থানরত চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মহিন হোসেন বলেন, “পরীক্ষার আগে হুর-ই-জান্নাতি ম্যাম বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন দেন। ওই শিক্ষার্থী একই বিভাগের তার এক বন্ধুকে মেসেঞ্জারে পাঠায়। পরে তার বন্ধুর সঙ্গে মনমালিন্য হলে সে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে সেটা প্রকাশ করে। যে প্রশ্নপত্র তাদের দিয়েছে, পরীক্ষার হলে দেখা সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিল। এছাড়া ম্যাম তার কাছের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য সকলের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে।”
তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি আমাদের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। বিভাগের অভিযোগের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আমাদের কয়েকজনের উত্তরপত্রের চারটি পেজ ছেড়া। এমনকি আমাদের এক শিক্ষার্থী শূন্য পেয়েও চূড়ান্ত পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে। এটা কি করে সম্ভব? আমরা চেয়ারম্যান ম্যামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং আমাদের বিরুদ্ধে যে অন্যায় করা হয়েছে, তার উপযুক্ত বিচার চাই।”
শিক্ষার্থী সাগর রায় বলেন, “আমাদের এক শিক্ষক ইনকোর্স, মিডটার্মসহ সব পরীক্ষা নিয়েছেন। ওই শিক্ষকের কোনো ফলাফল না নিয়েই চেয়ারম্যান ম্যাডাম তার স্বাক্ষর নকল করে পরীক্ষক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে ফলাফল জমা দিয়েছেন। আমরা ওই শিক্ষকের কাছেই জানতে পেরেছি, তিনি ফলাফল জমা দেননি।”
হেনস্তার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমার কাছে আসেনি। রিপোর্ট আসার পরে আমরা দেখব এবং সিদ্ধান্ত নেব। অভিযোগ মিথ্যা না সত্য, এটা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে জানতে হবে “
তিনি বলেন, “সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান বলেছেন, কমিটি পূর্ণ গঠন করার জন্য। সে বিষয়টিও আমরা দেখছি। আমরা আশা করছি, সত্য বের হয়ে আসবে।”
ঢাকা/বাদল/মেহেদী