টাঙ্গাইলে জুয়ার আসর, বিএনপি নেতার হুমকির অডিও ভাইরাল
Published: 3rd, February 2025 GMT
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লাল মাহমুদ খান ওরফে লাল খাঁর নেতৃত্বে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা নিয়ে জমির মালিককে হুমকির দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জমির মালিককে হুমকি দেওয়ার অডিও এবং জুয়া আসরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদী সংলগ্ন ভূঞাপুর উপজেলার তেঘুরী এলাকায় জুয়া খেলা চলছে। ওই এলাকার মিল্টনের জমিতে জুয়ার আসর বসে। ভূঞাপুর পৌরসভার বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লাল খাঁ জুয়া আসরের নিয়ন্ত্রণ করেন। নিরাপদ থাকায় উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে জুয়াড়ুরা এখানে আসে। এছাড়াও উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের পুনর্বন (নেংরা) বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী এরশাদ ও ভাঙ্গারির দোকানদার মজনুর নেতৃত্বে জুয়ার আসর চলে। এতে উপজেলায় প্রতিনিয়ত চুরি ও ডাকাতি হচ্ছে। কোনোভাবে তা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
ভূঞাপুর পৌরসভার তেঘুরী গ্রামে একই উপজেলার কুকাদাইর এলাকার মেঘদুল, গোপীনাথপুর চরের মামুন, কুঠিবয়ড়ার মামুন, মাষ্টারপাড়ার রঞ্জু এবং বাগবাড়ির এলাকার সেকাম জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে। প্রতিদিন দুই জায়গায় জুয়ার আসরে আসে শতাধিক জুয়াড়ু। প্রতিদিন জুয়ায় লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়। জুয়াড়ু সেকামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
সংস্কারের আলাপ যত, সংকট তত: তারেক রহমান
সাতক্ষীরায় বিএনপির কমিটি গঠন স্থগিত
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, গ্রামাঞ্চল হওয়ায় জুয়াড়ুয়া নিরাপদে দিনে ও রাতে বসে টাকা দিয়ে তাস খেলে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এগুলো হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলায় একদল জুয়াড়ু প্লাস্টিকের ছালা বিছিয়ে বসেছে। সেখানে জুয়ার বোর্ডের একজন তাস রেডি করছে। বসে থাকা জুয়াড়ুরা টাকা সামনে রাখছে। পাশে দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করছে আরেকদল। ৫ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ওই অডিওতে জমির মালিক মিল্টনকে বিএনপি নেতা লাল খানকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘তুই থানায় যাইয়া বলবি নাকি কোথায় কী বলবি, বলগা। ওখানে প্রশাসনরে দিয়ে আমি বোর্ড বসাইছি। ওনে চট্রগ্রাম থেকেও আইব। আমি বসাই দিছি, প্রশাসন বসাইছে। যা তুই ফিরাগা, দেখমুনি আমি। তোরে আজকে থেকে আমি সরাইয়া দিলাম।’’ এক পর্যায়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা লাল খাঁ জানান, সুপার এডিট করে অডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলু বলেন, সাংগঠনিকভাবে বিএনপি নেতা লাল খাঁনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পৌর কমিটিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, ‘বিভ্রান্ত’ ছড়ানোকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জুয়া এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল বলেও জানান।
ঢাকা/কাওছার/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জ য় র আসর ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।