টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লাল মাহমুদ খান ওরফে লাল খাঁর নেতৃত্বে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা নিয়ে জমির মালিককে হুমকির দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জমির মালিককে হুমকি দেওয়ার অডিও এবং জুয়া আসরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদী সংলগ্ন ভূঞাপুর উপজেলার তেঘুরী এলাকায় জুয়া খেলা চলছে। ওই এলাকার মিল্টনের জমিতে জুয়ার আসর বসে। ভূঞাপুর পৌরসভার বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লাল খাঁ জুয়া আসরের নিয়ন্ত্রণ করেন। নিরাপদ থাকায় উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে জুয়াড়ুরা এখানে আসে। এছাড়াও উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের পুনর্বন (নেংরা) বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী এরশাদ ও ভাঙ্গারির দোকানদার মজনুর নেতৃত্বে জুয়ার আসর চলে। এতে উপজেলায় প্রতিনিয়ত চুরি ও ডাকাতি হচ্ছে। কোনোভাবে তা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।

ভূঞাপুর পৌরসভার তেঘুরী গ্রামে একই উপজেলার কুকাদাইর এলাকার মেঘদুল, গোপীনাথপুর চরের মামুন, কুঠিবয়ড়ার মামুন, মাষ্টারপাড়ার রঞ্জু এবং বাগবাড়ির এলাকার সেকাম জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে। প্রতিদিন দুই জায়গায় জুয়ার আসরে আসে শতাধিক জুয়াড়ু। প্রতিদিন জুয়ায় লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়। জুয়াড়ু সেকামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগে মামলা রয়েছে।

আরো পড়ুন:

সংস্কারের আলাপ যত, সংকট তত: তারেক রহমান

সাতক্ষীরায় বিএনপির কমিটি গঠন স্থগিত

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, গ্রামাঞ্চল হওয়ায় জুয়াড়ুয়া নিরাপদে দিনে ও রাতে বসে টাকা দিয়ে তাস খেলে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এগুলো হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলায় একদল জুয়াড়ু প্লাস্টিকের ছালা বিছিয়ে বসেছে। সেখানে জুয়ার বোর্ডের একজন তাস রেডি করছে। বসে থাকা জুয়াড়ুরা টাকা সামনে রাখছে। পাশে দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করছে আরেকদল। ৫ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ওই অডিওতে জমির মালিক মিল্টনকে বিএনপি নেতা লাল খানকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘তুই থানায় যাইয়া বলবি নাকি কোথায় কী বলবি, বলগা। ওখানে প্রশাসনরে দিয়ে আমি বোর্ড বসাইছি। ওনে চট্রগ্রাম থেকেও আইব। আমি বসাই দিছি, প্রশাসন বসাইছে। যা তুই ফিরাগা, দেখমুনি আমি। তোরে আজকে থেকে আমি সরাইয়া দিলাম।’’ এক পর্যায়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়।

তবে অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা লাল খাঁ জানান, সুপার এডিট করে অডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলু বলেন, সাংগঠনিকভাবে বিএনপি নেতা লাল খাঁনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পৌর কমিটিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, ‘বিভ্রান্ত’ ছড়ানোকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জুয়া এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল বলেও জানান।

ঢাকা/কাওছার/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জ য় র আসর ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন’, জামায়াত আমিরের দুঃখ প্রকাশ

নারী বিষয়ক কমিশনের রি‌পোর্ট‌কে শরীয়তবিরোধী ও অগ্রহণযোগ্য রিপোর্ট উল্লেখ ক‌রে এর ওপর বুধবার প্রদত্ত বক্তব্যের এক পর্যায়ে একটি শব্দের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন হয়েছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন বাংলা‌দেশ জামায়া‌তে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বৃহস্প‌তিবার (১ মে) নি‌জের ও দ‌লের ফেসবুক পে‌জে এ কথা ব‌লেন তিনি।

এতে তি‌নি জানান, অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন হয়েছে, যা একান্তই অনিচ্ছাকৃত। এজন‌্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তি‌নি।

আরো পড়ুন:

প্রতিহিংসার রাজনীতিতে শান্তি আসতে পারে না: জামায়াত আমির

দেশকে যে ভালোবাসে, সে দেশ ছেড়ে পালায় না: শফিকুর রহমান

জামায়াত আমির ব‌লেন, “রেইপ হচ্ছে বিবাহবহির্ভূত এক ধরনের জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক, যা সাধারণত বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে ঘটে, যেখানে অপরাধী ব্যক্তিটি অসৎ ও দোষী, কিন্তু ভিকটিম সম্পূর্ণ নিরপরাধ।”

“আমি এটাও মনে করি যে, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ‘রেইপ' এর মতো জঘন্য শব্দকে প্রবেশ করানো পবিত্র এই সম্পর্কের জন্য অবমাননাকর এবং দীর্ঘ মেয়াদে দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে কারো দ্বারা সীমালঙ্ঘন বা জুলুম সংঘটিত হলে তা স্বাভাবিক বিচারের আওতায় অবশ্যই আনতে হবে। কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যকার কোনো অনাকাঙ্খিত বিষয়কে রেইপ বা ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে তুলনা করা অবাঞ্ছণীয় এবং দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যাজনক।”

“আমার এই অনিচ্ছাকৃত শব্দ চয়নের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায় এবং জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান সর্বদা সেই মূলনীতির ওপরই প্রতিষ্ঠিত,” ব‌লেও দা‌বি ক‌রেন তি‌নি।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ