প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে প্রতারকদের প্রতারণার কৌশলও পাল্টাচ্ছে। সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিতে প্রতারকেরা নতুন নতুন উপায় বের করছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশের ব্যাংক ও সরকারি সংস্থার ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) প্রযুক্তি ও কার্যক্রম নকল করে প্রতারণার ঘটনা বেড়েছে। এই ভুয়া আইভিআর কল প্রতারণার মাধ্যমে সহজেই যেকোনো ব্যক্তি আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন।

আইভিআর হলো একটি স্বয়ংক্রিয় ফোনব্যবস্থা, যা সাধারণত বিভিন্ন ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর ও গ্রাহকসেবাকেন্দ্র ব্যবহার করে থাকে। এ প্রযুক্তিসুবিধার মাধ্যমে গ্রাহকেরা নিজেদের ফোনের কিপ্যাড চেপে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য ও সেবা নিতে পারেন। যেমন ‘১ চাপুন ইংরেজির জন্য’ বা ‘২ চাপুন ব্যালেন্স জানার জন্য’। প্রতারকেরা এখন এই প্রযুক্তির নকল সংস্করণ তৈরি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করছে। তারা ব্যাংক বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ভুয়া আইভিআর কল করে গ্রাহকদের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করছে। অনেকে বুঝতেই পারেন না, যে স্বয়ংক্রিয় কণ্ঠ শুনছেন, সেটি আসল না নকল।

এ ধরনের প্রতারণার জন্য সাধারণত আসল আইভিআর সিস্টেমের আদলে নকল স্বয়ংক্রিয় ফোনকল করা হয়। এরপর গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে তাদের কাছ থেকে ব্যাংকিং তথ্য, ওটিপি বা কার্ড নম্বর হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। প্রথমত, কলার আইডি স্পুফিংয়ের মাধ্যমে ফোনকল করায় নম্বরটি ব্যাংক বা সরকারি সংস্থার আসল নম্বরের মতো দেখায়। এতে গ্রাহকেরা সহজেই প্রতারিত হন।

দ্বিতীয়ত, ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা আসল আইভিআর সিস্টেমের মতো স্বয়ংক্রিয় কণ্ঠস্বর তৈরি করে। ফলে গ্রাহকেরা সহজে প্রতারণার ফাঁদে পড়েন। তৃতীয়ত, ভয় দেখানোর মাধ্যমে বিভ্রান্ত করে প্রতারিত করা হয়। অ্যাকাউন্ট দুই ঘণ্টার মধ্যে ব্লক হয়ে যাবে বা একটি অননুমোদিত লেনদেন শনাক্ত করা হয়েছে এমন বার্তা দিয়েও গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করা হয়। ফলে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতারিত হন।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র হকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ

চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ