বিশ্বজুড়ে গত বছর (২০২৪) রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত সিপিজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব নিহতের ঘটনার প্রায় ৭০ শতাংশের পেছনে এককভাবে দায়ী ইসরায়েল।

সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ১৮টি দেশে অন্তত ১২৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল ১০২ জন। আর ২০২২ সালে ৬৯ জন।

তিন দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিক আর সংবাদমাধ্যমের ওপর আঘাতের তথ্য সংরক্ষণ করছে সিপিজে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের হিসাব রাখার পর থেকে এর আগে এক বছরে এত বেশিসংখ্যক সাংবাদিক নিহতের ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে ২০০৭ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ১১৩ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছিল বলে জানিয়েছে সিপিজে। ওই সময় ইরাক যুদ্ধের কারণে এক বছরে এতজন সাংবাদিকের জীবন গিয়েছিল।

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ৮৫ জন সাংবাদিক নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে সিপিজে। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ৭৮ জন।

এ বিষয়ে সিপিজের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, ‘তাদের কাছে পর্যাপ্ত কোনো তথ্য নেই। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কখনোই সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু বানায়নি, বানাবেও না।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষার আহ্বান সিপিজেসহ তিন সংস্থার২৪ আগস্ট ২০২৩

সিপিজের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সুদান ও পাকিস্তানে ৬ জন করে, মেক্সিকোয় ৫ জন, মিয়ানমার, লেবানন ও ইরাকে ৩ জন করে এবং হাইতিতে ২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

সংগঠনটির হিসাবে, বিশ্বজুড়ে গত বছর ৪৩ জন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আগের বছর নিহত হয়েছিলেন ১৭ জন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে সংখ্যাটি ছিল ১২ জন।

সিপিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এক বিবৃতিতে বলেন, সংগঠনের ইতিহাসে বর্তমান সময়কে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বিবেচনা করা হচ্ছে।

এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত বিশ্বে অন্তত ছয়জন সাংবাদিক নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে সিপিজে।

আরও পড়ুনগাজায় আরেক সাংবাদিক নিহত, এ পর্যন্ত ১২০২৭ জানুয়ারি ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ত বছর

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম সচল করার পর তিন জেলায় তিন নেতার পদত্যাগ
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • এনসিপির জাতীয় ছাত্রশক্তির কমিটি ঘোষণা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জাহিদ–বাকের
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা