সামরিক তৎপরতার মুখে জাপোরিঝঝিয়াতে পরিদর্শনে ব্যর্থ আইএইএর পর্যবেক্ষকেরা
Published: 13th, February 2025 GMT
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়া–নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষকেরা গতকাল বুধবারের নির্ধারিত কার্যক্রম চালাতে পারেননি। ব্যাপক সামরিক তৎপরতার কারণেই এমনটা হয়েছে বলেছে জানিয়েছে সংস্থাটি। আইএইএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি এ কথা জানিয়েছেন।
কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটার জন্য রাফায়েল গ্রসি কাউকে দায়ী করেননি। তবে গ্রসি বলেছেন, তাঁর সংস্থার কর্মীদের এ ধরনের পরিস্থিতিতে ফেলা ঠিক হয়নি।
আইএইএর নজরদারি কার্যক্রম বাতিল হওয়ার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে দায়ী করেছে।
আইএইএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গ্রসি লিখেছেন, ‘সামরিক সংঘাতের সময় পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও আমাদের কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন। সুপরিকল্পিত ও সমঝোতার ভিত্তিতে আমাদের কর্মীদের আজ যে পর্যবেক্ষণ হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করার ঘটনায় আমি অত্যন্ত ব্যথিত।’
গ্রসি আরও বলেন, ‘এভাবে আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা বিপন্ন করার বিষয়টি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’
পর্যবেক্ষকেরা যেন তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন এবং পারমাণবিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন গ্রসি।
রাশিয়া অভিযোগ করেছে, আইএইএর কর্মীদের চলাচল ব্যাহত করতে ইউক্রেন ‘উসকানিমূলক’ কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
অঞ্চলটিতে রাশিয়া-নিযুক্ত গভর্নর ইয়েভজেনি বালিৎস্কি অভিযোগ করেছেন, পারমাণবিক কেন্দ্রটির নিকটবর্তী শহর এনেরহোদারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ওই শহরে পারমাণবিক কেন্দ্রটির অনেক কর্মীর বসবাস। বালিৎস্কি বলেছেন, ড্রোনের ধ্বংসাবশেষগুলো পারমাণবিক কেন্দ্রের একটি চুল্লির ৩০০ মিটারের মধ্যে পড়েছিল।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হেওরাই তাইখাই বলেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আইএইএর কর্মীদের কার্যক্রম ব্যাহত করেছে। তাঁর অভিযোগ, রাশিয়া এর আগেও একই কৌশল ব্যবহার করেছিল।
তাইখাই বলেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার ইঙ্গিত দেওয়ার পরও কর্মীদের চলাচল শুরুর এক ঘণ্টা আগে ওই এলাকায় ফাঁকা গুলি ছোড়াসহ বিভিন্ন বৈরী পরিস্থিতি তৈরি করেছে তারা।
জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক কেন্দ্র। এর ছয়টি চুল্লি আছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলার শুরুর পর পরই রাশিয়া এটির দখল নেয়। তখন থেকে দুই পক্ষ পারমাণবিক কেন্দ্রের আশপাশে হামলা এবং পারমাণবিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করা নিয়ে একে অপরকে দায়ী করে আসছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইউক্রেনে আইএইএর পর্যবেক্ষকেরা নিযুক্ত আছেন। ইউক্রেনের সব কটি পারমাণবিক কেন্দ্রেই তাঁদের উপস্থিতি আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ম দ র ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে ৯৯৯-এ মারামারির অভিযোগ ছিল ৪ হাজার ১০২টি
১৫ হাজার ৬১৯ জন। অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জরুরি সহায়তা দেয় পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস। তবে এ সময় সবচেয়ে বেশি ছিল মারামারির অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে এই সংখ্যা ৪ হাজার ১০২টি।
রোববার পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, ঈদুল আজহার ছুটির মধ্যে ৫ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ৯৯৯-এ আসা কলের ভিত্তিতে জরুরি পুলিশি সহায়তা দেয় ১৩ হাজার ৮৩১ জনকে। একই সময়ে ৯৯৩ জনকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও ৭৯৫ জনকে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা দেওয়া হয়।
এবারের কোরবানি ঈদে দেশজুড়ে যত্রতত্র পশুর হাট, রাস্তা ও নৌপথে পশু পরিবহন, পশু জবাই ও জনসমাগমের কারণে নানা বিশৃঙ্খলার শঙ্কা ছিল। তবে ৯৯৯-এ কলের ভিত্তিতে কার্যকর মনিটরিং ও তৎপরতায় এসব সংকট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
ঈদে যেসব অপরাধ বা বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এসেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পশুর হাট ও রাস্তায় চাঁদাবাজি, জোর করে পশু অন্য হাটে নিয়ে যাওয়া, অজ্ঞান/মলম পার্টির তৎপরতা এবং অতিমাত্রার শব্দদূষণ। এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা পান ১ হাজার ২৭১ জন।
তাছাড়া কাউকে আটকে রাখা-সংক্রান্ত অভিযোগে সাড়া দেওয়া হয় ১ হাজার ২১৪ জনকে। পাশাপাশি জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পান ১ হাজার ৬২ জন ও বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে সহায়তা দেওয়া হয় ৯৯২ জনকে।
৯৯৯ সেবা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঈদে মানুষের চলাচল, পশু কেনাবেচা, বড় আকারের জনসমাগম—সবকিছু মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে যাচাই করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিশেষ করে ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি চালানো হয়।