হামলার জেরে মুন্সীগঞ্জে সংঘর্ষ, সাতজনের অবস্থা গুরুতর
Published: 16th, February 2025 GMT
জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে একপক্ষের হামলার পর দু’পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর। শনিবার দুপুরে উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরী বাজারে এ সংঘর্ষ হয়। হামলার জন্য একটি পক্ষ ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি স্বপন শেখ ও তাঁর লোকজনকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সুমন চোকদার গনাইসার গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে একই গ্রামের আমিনুল ইসলাম চোকদারের। কয়েক দিন আগেও দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। শনিবার দুপুরে আমিনুল ইসলাম সিদ্ধেশ্বরী বাজারে যান। সেখানে সুমন চোকদারের পক্ষ নিয়ে পাঁচগাঁও ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি স্বপন শেখ ও তাঁর লোকজন নিয়ে আমিনুলদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কয়েকজন গুরুতর আহত হন। পরে বাজারের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে স্বপন শেখ লোকজন নিয়ে পালিয়ে যান।
আমিনুলের বোন জুঁই আক্তার বলেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে আমার দাদার জানাজা ছিল। সেখান থেকে আমার ভাই সিদ্ধেশ্বরী বাজারে যান। সুমন চোকদার ও স্বপন শেখের নেতৃত্বে আমার ভাই রূপক, আত্মীয় রাকিব ও সজীবকে মেরে গুরুতর আহত করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’
এলাকাবাসী আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসক তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। তারা হলেন– আমিনুল ইসলাম (৩২) রূপক চোকদার (৪২), রাকিব কবিরাজ (৩০) ও সজীব চোকদার (৩৪) এবং একই গ্রামের উপজেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক গনাইসার সুমন চোকদারের পক্ষের মান্দ্রা গ্রামের মাসুম শেখ (৩৬), দীপু মজুমদার (৪০) ও শিপন শেখ।
যুবদল নেতা স্বপন শেখের ভাষ্য, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। আওয়ামী লীগের লোকজন আমাকে ও আমার লোকজনকে বাজারে এসে মারধর করেছে।’
টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ আহত স বপন শ খ র ল কজন ল ইসল ম আম ন ল স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর লুট হওয়া বই ফেরত পেয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুপক্ষের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে লুট হওয়া প্রায় চার শতাধিক বই পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়।
এর আগে, পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুট শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে। এরপরই প্রশাসন বই ফেরতের উদ্যোগ নেয়।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েম ইমরান, ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি খায়রুল মুন্সী, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।
উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভার শুরুতে ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ উভয়পক্ষকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। পরে পাঠাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ কীভাবে বইগুলো পাঠাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বর্ণনা তুলে ধরেন। পরে যেসব যুবক বই নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী রিশাদ বক্তব্য দেন। বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গোলাম রব্বানী রিশাদ বলেন, ‘‘পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করেছি, তারা যেন কোনো ধর্মবিরোধী বা নিষিদ্ধ বই পাঠাগারে না রাখেন।’’
পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘পাঠাগারে কোনো ধর্মবিরোধী বই ছিল না। সেদিন যে বইগুলো নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই ছিল।’’
ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘‘উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে বইগুলো পাঠাগারে দিয়ে আসা হয়েছে।’’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে একদল যুবক গিয়ে প্রায় চার শতাধিক বই লুট করেন। পরে বইগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তারা। সেদিন দাবি করা হয়েছিল, বইগুলো ধর্মবিরোধী।
ঢাকা/কাওছার/রাজীব