গাজীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫, আহত ৩
Published: 16th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর ও কালিয়াকৈরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও দুই চালকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিনজন।
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এবং শ্রীপুর উপজেলা এলাকায় দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুর্ঘটনা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জামুরহাট গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ট্রাকচালক শাহাদত হোসেন, একই জেলার কাহালু উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে ট্রাকচালক সবুজ মিয়া এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নন্দবালা গ্রামের আরিফ হোসেন। তিনি ট্রাকের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।
শ্রীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- শেরপুরের নকলা উপজেলার হুজুরিকান্দি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাশেদ ইকবাল এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পূর্বপাড়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক।
শনিবার শ্রীপুরের মওনা ইউনিয়নের কাওরান বাজার এবং গাজীপুর ইউনিয়নের এমসি বাজার এলাকায় দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
নওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার বোর্ডঘর এলাকায় তিন ট্রাকের সংঘর্ষে দুই চালক এবং তাদের এক সহযোগীর মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এবং অপরজন পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে সড়কে পড়ে নিহত হন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক মাওনা চৌরাস্তা থেকে কালিয়াকৈর যাচ্ছিলেন। মাওনা-কালিয়াকৈর সড়কের কাওরান বাজারে পৌঁছালে লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতালে চিকিৎসার পর শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে পরীক্ষা পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দুর্ঘটনায় আরো তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
আবু বক্কর ছিদ্দিক গাজীপুরের কালিয়াকৈর প্রাইম ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
ঢাকা/রফিক/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন য় উপজ ল র র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।