গাজীপুরের শ্রীপুর ও কালিয়াকৈরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও দুই চালকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। 

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এবং শ্রীপুর উপজেলা এলাকায় দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুর্ঘটনা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জামুরহাট গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ট্রাকচালক শাহাদত হোসেন, একই জেলার কাহালু উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে ট্রাকচালক সবুজ মিয়া এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নন্দবালা গ্রামের আরিফ হোসেন। তিনি ট্রাকের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।

শ্রীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- শেরপুরের নকলা উপজেলার হুজুরিকান্দি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাশেদ ইকবাল এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পূর্বপাড়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক। 

শনিবার শ্রীপুরের মওনা ইউনিয়নের কাওরান বাজার এবং গাজীপুর ইউনিয়নের এমসি বাজার এলাকায় দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।

নওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার বোর্ডঘর এলাকায় তিন ট্রাকের সংঘর্ষে দুই চালক এবং তাদের এক সহযোগীর মৃত্যু হয়।

অপরদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এবং অপরজন পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে সড়কে পড়ে নিহত হন। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক মাওনা চৌরাস্তা থেকে কালিয়াকৈর যাচ্ছিলেন। মাওনা-কালিয়াকৈর সড়কের কাওরান বাজারে পৌঁছালে লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতালে চিকিৎসার পর শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে পরীক্ষা পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দুর্ঘটনায় আরো তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

আবু বক্কর ছিদ্দিক গাজীপুরের কালিয়াকৈর প্রাইম ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

ঢাকা/রফিক/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন য় উপজ ল র র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান

লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ