শরীয়তপুরে অনুমোদনহীন চিড়িয়াখানায় অভিযান, বিভিন্ন প্রজাতির ৩১ প্রাণী উদ্ধার
Published: 16th, February 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ার কলুকাঠি এলাকায় মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নামে শিশুপার্ক ও পিকনিক স্পটের মধ্যে স্থাপিত অনুমোদনহীন মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে চিড়িয়াখানা থেকে ১০ প্রজাতির ৩১টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল এ অভিযান চালায়।
বন অধিদপ্তর ও মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে ২০০৫ সালে মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম এবং মিনি চিড়িয়াখানা স্থাপন করেন ব্যবসায়ী ও চিকিৎসক আলগীর মতি। মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম ও পার্কের অনুমোদন আছে। কিন্তু বিনোদন পার্কের ভেতরে স্থাপিত ছোট চিড়িয়াখানাটি পরিচালনার জন্য কোনো অনুমোদন নেই। একটি সংবাদের ভিত্তিতে বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১টি ভাল্লুক, ১টি মিঠা পানির কুমির, ১টি বার্মিজ অজগর, ৮টি শজারু, ১টি মেছো বিড়াল, ২টি বনবিড়াল, ২টি কালিম পাখি, ১০টি ঘুঘু, ২টি টিয়া, ৩টি বালিহাঁস উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা দলটি পাখিগুলো অবমুক্ত করে দিয়েছে। অন্যান্য বন্য প্রাণীগুলো ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাণীগুলোকে কয়েক দিন ঢাকায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এরপর গাজীপুর সাফারি পার্কে দেওয়া হবে।
মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডমের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক স্থানে ছোট চিড়িয়াখানা চালু আছে। সরকারের কোনো পর্যায় থেকে ওই চিড়িয়াখানা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই আমরাও চিড়িয়াখানা চালানোর জন্য কোনো অনুমতি নিইনি। গত ২০ বছরে কখনো বাধার মুখে পড়িনি। এখন যেহেতু বাধা পেয়েছি, তাই এটা আর চালানো হবে না। বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বন্য প্রাণীগুলো দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, বন্য প্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী, বন্য প্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া বিভিন্ন ধরনের দেশীয় বন্য প্রাণী মিনি চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। তাই অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩১টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে মুচলেকা দেওয়া হয়েছে, তারা আর কখনো বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করবে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র বন য প র ণ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।