আহসান মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘সুফি ফেস্ট’। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব।
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে থাকবে পুঁথিপাঠ, মুরশিদি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মারফতি, লোকসংগীতের পাশাপাশি মূল আকর্ষণ থাকবে নাফস ও কারার ব্যান্ডের কাওয়ালি পারফরম্যান্স, দ্য সার্কেল ট্রুপের সুফি রাক্স (রুমি ড্যান্স) ও সুফি হাদরাসহ আকর্ষণীয় বহু অনুষঙ্গ।
সুফি ফেস্টের আয়োজক শেখ ফাহিম ফয়সাল জানিয়েছেন, শাহবাজ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে সুফি ফেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। দিনব্যাপী এ আয়োজনে আর্ট সেশন, মেডিটেশন সেশন, বাঁশি এবং ভায়োলিন সেশন, প্রশ্নোত্তর পর্ব, সুফি রাক্স ওয়ার্কশপ, সুফি হাদরা ওয়ার্কশপসহ গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন রয়েছে। তা ছাড়া বই, ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই এবং নবাব বাড়ির খাবার, পোশাক, বিভিন্ন তৈজসপত্র, পারফিউম, ব্যাগ, উত্তরীয়, নানাধরণের বাদ্যযন্ত্রসহ অনুষ্ঠানে বিচিত্র স্টল থাকবে।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে শাকিরা
হাড় ভেঙেছে কে-পপ তারকা ফিলিক্সের
দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, দেশবিদেশের সুফি-মাশায়েখ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদগণ উপস্থিত থাকবেন বলেও জানান ফাহিম ফয়সাল।
‘সুফি ফেস্ট’ মূলত চিরায়ত বাংলার সুফি মেলা। তবে এই মেলার আধুনিকায়ন করে শহরের আবহে সাজানো হয়েছে। এই উৎসবে অংশ নিতে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। এ তথ্য উল্লেখ করে ফাহিম ফয়সাল বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর পর আহসান মঞ্জিলে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর মধ্যে প্রধানতম হলো আহসান মঞ্জিল। এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বৃদ্ধি করবে। যারা সুফি ফেস্টে অংশগ্রহণ করবেন তারা অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’