একই ট্রাইব্যুনালে হাসিনারও বিচার হবে: গোলাম পরওয়ার
Published: 21st, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “যে ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা, সাজানো, পাতানো মামলায় নিজামী, মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে- সেই ট্রাইবুনালেই মানবতাবিরোধীদের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার বিচার হবে। তবে শেখ হাসিনার আমলের ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা মামলা আর কথিত বিচার হলেও এখন সঠিক বিচার হলেই শেখ হাসিনা শাস্তি পাবেন।”
৫ আগস্টের পর অনেক আসামি মুক্তি পেলেও জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে বিনা অপরাধে এখনও কারাগারে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, “এজন্য আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা দুইটা থেকে চারটা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।”
ওই অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি দেশবাসীকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সরকারের বিরুদ্ধে নই, জুলুমের বিরুদ্ধে।”
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, “৫৩ বছরে দেশের মানুষ অনেক সরকারের শাসন দেখেছে। এখন দেখতে বাকি জামায়াতের শাসন। নতুন বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জামায়াত সহযোগিতা করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অনেকে আছে এখনই নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় বসতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি, যেসব জায়গায় বিগত পনের বছরের জঞ্জাল রয়েছে সেগুলো আগে পরিষ্কার করে, সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দিতে হবে। দেশবাসী আর ২০১৪, ২০১৮ আর ২০২৪ এর মতো কোন নির্বাচন দেখতে চায় না। বিগত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশলীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। আর কোনদিন তেমন নির্বাচন এদেশের মানুষ দেখতে চায় না। দেশবাসী চায় একটি পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।”
ফুলতলা ইউনিয়ন আমীর মাস্টার মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস;
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর খুলনা জেলার সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, ফুলতলা উপজেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলিম মোল্যা, নায়েবে আমীর মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান খান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সেক্রেটারি আলী আকবর মোড়ল।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, জামাত নেতা আশরাফুল আলম, ছাত্র শিবির নেতা মোহাম্মদ হোসাইন, যুব বিভাগের সভাপতি মেহেদী হাসান জুলহাস মোল্লা, ছাত্রশিবির নেতা মো.
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ইসল ম র ফ লতল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে নভেম্বরে গণভোট, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে আগামী নভেম্বরে গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার স্বাধীনতা চত্বরে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান। ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটি এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছে। এবার হিন্দুদের ভাগ্যের উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামী সরকার।
গোলাম পরওয়ার বলেন, যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে হিন্দুদের ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে এবার হিন্দুরা ভয় পাবে না। হিন্দুদের কেউ বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এখন হিন্দুদের স্লোগান—সব মার্কা দেখা শেষ, দাঁড়িপাল্লার বাংলাদেশ।
সম্মেলনে ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ মণ্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জিপি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের ঘোসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহ-সভাপতি ডা. হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রভাষক প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহ-সভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ডুমুরিয়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আপোষ সিংহ, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ন রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন তন্ময় মন্ডল সভাপতি, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক শ্রীমতি প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে, তারা সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করবে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই।
তিনি বলেন, “লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি- জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।”
২০২৪ সালের আন্দোলনে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাবি, চবি, রাবি, জাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে। আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।
সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক।”
আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।
মতুয়া সংঘের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, “আমরা আর সংখ্যালঘু পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।”
এ সম্মেলনকে ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে আসেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ। বাদ্যযন্ত্রসহ নারী-পুরুষ ও যুবকরা এতে অংশ নেন। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক