শৈলকুপায় তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার চরমপন্থির দায় স্বীকার
Published: 22nd, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুরে গতকাল শুক্রবার তিনজনকে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার বিষয়ে জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালু দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। স্থানটি কুষ্টিয়া জেলা-সীমানার কাছাকাছি। ঘটনাস্থলে গুলির খোসা পড়ে ছিল।
চরমপন্থি নেতা কালুর পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘সন্ধ্যায় রামচন্দ্রপুর খালের মধ্যে তিনজনকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছে।’ সড়কের ওপর দুটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে বলেও জানিয়েছে তারা।
চরমপন্থিরা ঘোষণা করেছে, ‘এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিণাকুণ্ডু নিবাসী মো.
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মন্জুর মোর্শেদ সমকালকে বলেন, তিনজনের লাশ পাওয়া গেছে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হানিফ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়েছেন। জেল থেকে বেরিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর বাড়ি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আহাদনগর গ্রামে। যে এলাকায় হত্যাকাণ্ডের কথা শোনা যাচ্ছে, সেটি শৈলকুপার মধ্যে। এলাকাটি নির্জন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শৈলকুপা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। তবে মৃত্যুর বিষয়টি গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেনি।
হানিফের একজন স্বজন জানিয়েছেন, হানিফ মারা যাননি। তবে অন্য কয়েকজন মারা গেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। সন্ধ্যার দিকে ওই এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে ঠিক কেউ মারা গেছে, না আহত হয়েছে– নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় ওই সূত্র।
শৈলকুপা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম নিহতদের নাম তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।