মধুর ক্যানটিনে শিবিরের সংবাদ সম্মেলনের ধৃষ্টতা মানার নয়: ছাত্র ইউনিয়ন
Published: 23rd, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যানটিনের সামনে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রশিবিরের করা সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি (একাংশ) মাহির শাহরিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ।
বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন বলেছে, মধুর ক্যানটিনের স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দের (মধুদা) হত্যাকারীদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে মধুদাকে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেই ঘাতকদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির মধুর ক্যানটিনে আজ সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তা স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।
মধুর ক্যানটিনে শিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজন স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতার জন্য লজ্জার—এ কথা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়ন বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সরাসরি উত্তরাধিকার ছাত্রশিবির; যারা মুক্তিযুদ্ধে আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে গণহত্যা চালিয়েছে। আজ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির তাদের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। আমরা শিবিরকে বর্জন করতে আপামর ছাত্র-জনতাকে আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুনছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: ছাত্রশিবির১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)