নাহিদ ইসলাম যা লিখলেন তাঁর পদত্যাগ পত্রে
Published: 25th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো.নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পরে তিনি পতাকা ছাড়া গাড়িতে করে যমুনা ছাড়েন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তাঁর ছাত্র-জনতার কাতারে উপস্থিত থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পদত্যাগপত্রে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করুন। প্রথমেই আমি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আপনার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে আমাকে সুযোগ দানের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’
নাহিদ ইসলাম আরও লেখেন ‘৮ আগস্ট শপথ নেওয়া উপদেষ্টা পরিষদে আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়ী পাই। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আপনার নেতৃত্বে দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট থেকেছি। কিন্তু বতর্মান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমার ছাত্র-জনতার কাতারে উপস্থিত থাকা উচিত মর্মে আমি মনে করি। ফলে আমি আমার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া সমীচীন মনে করছি। এ জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পদ থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে মহোদয়কে সবিনয় অনুরোধ করছি।’
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আগামী শুক্রবার নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদত য গপত র ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্লেষণ: ইসরায়েলিরা এখন বুঝতে পারছে ফিলিস্তিনি ও লেবানিজরা কী ভোগ করছে
ফিলিস্তিনের গাজাকে মৃত্যু উপত্যকা বানিয়ে, প্রতিবেশী লেবাননকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামায় ইসরায়েলের জনগণ সত্যিকার অর্থে বিভীষিকার মধ্যে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা পাচ্ছে। ইরানের পাল্টা হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া ভবন ও স্থাপনার বাসিন্দারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে, ভেঙে পড়া স্থাপনার নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়া স্বজনের লাশ যে কতটা যন্ত্রণার, তা ইসরায়েলিরা এবার উপলবিদ্ধ করছে।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলার বাস্তবতা নিয়ে আলজাজিরা কথা বলেছে সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিজা জে. ম্যাগনিয়ার সঙ্গে। তিনি মনে করেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত আরো গুরুতর রূপ নেবে। তবে তিনি বলেন, ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের সাধারণ মানুষের সমর্থন কমে আসতে পারে।
প্যারিস থেকে এলিজা মাগনিয়ার আলজাজিরাকে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে, কারণ এটি সেই যুদ্ধের শুরুর মাত্র কয়েক দিন, যেটা ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেছে।”
আরো পড়ুন:
লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহত
মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে লেবানন প্রেসিডেন্টের বৈঠক
এলিজা ম্যাগনিয়ার একজন অভিজ্ঞ যুদ্ধবিষয়ক সংবাদদাতা ও রাজনৈতিক ঝুঁকি বিশ্লেষক, যার অভিজ্ঞতা ৩৫ বছরেরও বেশি। তিনি মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন সংঘাত কাভার করেছেন। বর্তমানে তিনি আলরাই মিডিয়া গ্রুপ-এর সঙ্গে যুক্ত এবং ইরাকসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সামরিক বিশ্লেষণ ও রাজনৈতিক ভাষ্য বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তার দক্ষতা, যার মাধ্যমে তিনি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের চলমান সংঘাত ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা হাজির করেন।
আলজাজিরার প্রশ্নের জবাবে এলিজা ম্যাগনিয়ার বলেন, “ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এরইমধ্যে জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই যুদ্ধ খুবই ভয়াবহ হবে এবং এর মূল্য দিতে হবে চরমভাবে। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা ইসরায়েলি সমাজ এত ভয়াবহ ধ্বংসের আশঙ্কা করেনি। কারণ ১৯৭৩ সালের পর থেকে ইসরায়েল আর কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে এমন বড় মাত্রার যুদ্ধে যায়নি এবং কখনো এত বড় হামলা সহ্য করেনি; তাও আবার তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে।”
তিনি আরো বলেন, “তাই এখন তারা উপলব্ধি করতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা কী ভোগ করেছে, লেবানিজরা কী সহ্য করেছে। তারা নিজের চোখে ধ্বংস দেখতে পাচ্ছে- তেল আবিবে, হাইফায় ভবন ধসে পড়ছে, চারদিকে আগুন জ্বলছে। সম্পত্তি বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। মাত্র এক দিনেই আটজন নিহত, ২৫০ জন আহত; ইসরায়েলে বহু বছর ধরে এমন কিছু ঘটেনি। এসব পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি সমাজ মোটেই প্রস্তুত ছিল না।”
ঢাকা/রাসেল