বরেণ্য অভিনেতা আফজাল হোসেন। চিত্রশিল্পী হিসেবেও সমাদৃত। এ দুটো বিষয় নিয়ে অধিক ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে রাষ্ট্রের সমকালীন পরিস্থিতি, রাজনীতি নিয়েও সজাগ এই শিল্পী। তারই প্রমাণ মেলে ফেসবুকে। কারণ সমকালীন ভাবনাগুলো প্রকাশের জন্য মাঝে মাঝে এই মাধ্যম ব্যবহার করেন। ফের কিছু প্রশ্ন, ভাবনা ও শেয়ার করলেন এই চিরসবুজ অভিনেতা।

আফজাল হোসেন বলেন, “কবে দেশটাকে নিজের বলে মনে হয়েছিল? চুয়ান্ন বছরে অনেকবার মনে করার মতো সুযোগ এসেছে। অনেকবারই মনে হয়েছে, এইবার দেশ আসলেই আমাদের হলো। যতবার মনে হয়েছে, ততবারই সে অনুভবের আনন্দ টিকে থাকতে পেরেছে সামান‍্য কাল। কেউ কি কখনো ভেবে দেখেছে, কেন বারবার কপালে এই দুঃখ জোটে! কেন, কি কারণে জোটে তা নিয়ে বিস্তর ভেবেছে এদেশের বহু মানুষ বা জনগণ। ভেবেছে, ভাবে— তবে তত প্রকাশ‍্যে নয়, গোপনে। কেন গোপনে? আশঙ্কায়। যদি প্রকাশ‍ হয়ে পড়ে, দেশ আমার হয়নি, সে মন্তব্য অপরাধী বানিয়ে দিতে পারে। আর সে অপরাধ, দোষের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান মোটেও কম হয় না।”

একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আফজাল হোসেন বলেন, “কালে কালে প্রশ্ন করার লোক থাকে, থাকে জামার কলার বা ঘাড় ধরে ঝাঁকি দেয়ার মানুষ। তাদের রূঢ় আচরণ— এই দ্রোহী, দেশপ্রেমহীন, অরাজক এবং অসভ‍্য ভাবনার সাহস কোত্থেকে পেলিরে তুই? দেশটা আমার, আমাদের। আমরা আমাদের মতো করে দেশটাকে মনোযোগ দিয়ে এবং অমনোযোগী হয়ে ভালোবাসব, তা কেন খোলা মন নিয়ে প্রকাশ করতে দ্বিধা হবে? কেন ‘দেয়ালেরও কান আছে’ এমন শঙ্কায় সাধারণকে সদা সাবধানে থাকতে হয়? যদি দেশের দুর্দিন, অব‍্যবস্থা, মানুষের অযথা কষ্ট নিয়ে কারো ক্ষোভ, অভিমান, অনুযোগ থেকে থাকে- সেসকল যাতনার কথা নিজের মনে চেপে রাখতে হবে- নিজের দেশে এ ভয়-ডর কাকে, কেন করতে হয়?”

আরো পড়ুন:

লিমনের গানে জুটি বেঁধেছেন চমক-ইমরান

৮ বছরের পরিচয়, অতঃপর অভিনেত্রীর বিয়ে

ভয়ে মিনমিনে জীবনযাপন করতে হবে কেন? এ প্রশ্ন যেমন রেখেছেন, তেমনি স্বেচ্ছাচারিতার প্রসঙ্গও টেনেছেন এই অভিনেতা। তার ভাষায়, “নিজের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা প্রাণ-মন খুলে বলা যাবে না। কালে কালে নয়া নয়া মালিক বনে যাওয়াদের চোখ রাঙানো, গালি খাওয়া বা গলা চেপে ধরার ভয়ে মিনমিনে জীবনযাপন করতে হবে বা হয় কেন? যেসব মানুষেরা অর্ধশত বছরেরও অধিক কাল ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে দেশটাকে ভালোবেসেছেন, দেশ ও মানুষদেরকে দিয়েছেন অনেক- তাদের অসামান‍্য ভালোবাসা খাঁটি কি খাঁটি নয়- সে বিচারের দায় দায়িত্ব যার ইচ্ছা কাঁধে তুলে নিতে পারে- এ কেমন স্বেচ্ছাচারিতা?”

হুংকার দিয়ে শাসন করা ব্যক্তিরা সাধারণের ঘাড় মটকেছে। তারপর তৃপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করেছে বলে দাবি আফজাল হোসেনের। তিনি বলেন, “হুংকারে, গর্জনে জামানা শাসন করতে চাওয়া স্বার্থবাদীরা চিরকাল সাধারণের সস্তা ঘাড় মটকাতে চেয়েছে। মটকে দিতে পেরে ভেবেছে, আহা! বেশ মালিক মালিক অনুভব হচ্ছে। দেশ তাহলে আমাদেরই। অতএব হে সাধারণ, ভালো চাও যদি মান‍্য করো। অভিধানে জনগণ বলে যে সম্প্রদায়ের কথা লেখা, তাদের সঙ্গে এ ধারাবাহিক মশকরা কি জীবনভর চলতেই থাকবে?”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক আফজ ল হ স ন আম দ র ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: