সারাদেশে গ্রাহকসেবায় বিশেষ প্রচারণা ঘোষণা করেছে টেলিকম সেবাদাতা অপারেটর গ্রামীণফোন। আগামী ৭ মার্চ প্রচারণা শেষ হবে। যার আওতায় থাকছে বেশ কিছু অফার ও মেগা রিওয়ার্ড, যা গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও গ্রাহককেন্দ্রিকতার প্রতিশ্রুতিকে সমৃদ্ধ করবে বলে জানানো হয়।

গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) ফারহা নাজ জামান বলেন, সব সময় গ্রাহকের জন্য উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক পরিষেবা প্রদানে কাজ করছি, যা তাদের ডিজিটাল জীবনধারাকে সমৃদ্ধ ও দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করে।

১.

৩ প্রচারণা শুধু আকর্ষণীয় অফার নয়, উদ্যোগটি গ্রাহককেন্দ্রিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতির দৃঢ় প্রতিফলন। গ্রাহক এখন সহজে সংযোগ পাবেন, আরও বেশি সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন এবং ডিজিটাল যাত্রা হবে আরও আনন্দদায়ক। উদ্ভাবন ও সব ধরনের সেবা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সংযোগকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সবার জন্য অর্থবহ করে তোলা প্রচারণার উদ্দেশ্য।

জিপিস্টার গ্রাহকের জন্য থাকছে লয়েলটি স্ট্যাটাস আপগ্রেডের বিশেষ সুযোগ। নির্দিষ্ট পরিমাণ রিচার্জের মাধ্যমে গ্রাহক তাদের লয়ালটি স্ট্যাটাস আপগ্রেড করতে পারবেন। ৮৯৯ টাকা রিচার্জে গোল্ড স্ট্যাটাস আর ৯৯৮ টাকা রিচার্জে প্লাটিনাম স্ট্যাটাস পাবেন গ্রাহক। শুধু সংযোগ নয়, প্রচারণার আওতায় গ্রাহক তাদের দৈনন্দিন কেনাকাটায় পাবেন বিশেষ সুবিধা। স্বপ্ন, চালডাল, ঘরের বাজার, আস্থা ফুড ও যোগান থেকে গ্রোসারি কেনাকাটায় বিশেষ ছাড় উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহক। 

উদ্যোক্তারা জানান, সাশ্রয়ী ও সহজ কেনাকাটার মাধ্যমে গ্রাহকের ডিজিটাল জীবনধারাকে সমৃদ্ধ করে তুলতেই এমন আয়োজন। জানা গেছে, অন্যদিকে ৯৯৮ টাকা রিচার্জে সুমাশ টেক বিশেষ গিফট, পাঠাও ডিসকাউন্ট কুপন, শেয়ারট্রিপ সেবায় বিশেষ সেভিংসের মতো সুবিধা উপভোগ করা যাবে। থাকছে ক্যাশব্যাক ও বিশেষ ডিল সুবিধা। 

অন্যদিকে, গ্রাহকসেবায় থাকবে এয়ার টিকিট, শতভাগ ক্যাশব্যাক, জিপিফাইয়ে বিশেষ ছাড়ের মতো সুবিধা। নির্দিষ্ট পরিমাণ রিচার্জ করলে এক্সক্লুসিভ অফার, ক্যাশব্যাক, ভাউচার, মার্চেন্ডাইজ ও নতুন সিম অফার থাকছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র হক

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে মৃত্যু ও সংক্রমণ দ্বিগুণ

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এখন প্রায় এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বা ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর নিচে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম, বরগুনা, কুমিল্লা, কক্সবাজার শহরেরও। এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ‘ব্রুটো ইনডেক্স (বিআই)’। এই মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হওয়া মানে সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হবে।

মশা নিয়ে নিয়মিত জরিপ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তাঁর নেতৃত্বে সম্প্রতি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।

দেশে এডিস মশা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ মশার কামড়ে হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জুন মাসের তুলনায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুলাইয়ে (৩০ জুলাই পর্যন্ত) দ্বিগুণের বেশি। আর সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুই-ই বেশি

গতকাল পর্যন্ত দেশে ২০ হাজার ৭০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। শুধু জুন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছিল ১৯ জনের। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। জুনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৯৫১ জন। আর এ মাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪০৬ জন। চলতি মাসের সংক্রমণের এ সংখ্যা আগের ছয় মাসের বেশি। জুন থেকে জুলাই মাসে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজার ২৯৬ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত রোগী আক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি ৭৯ শতাংশ রোগীই ঢাকার বাইরের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ মাসের শুরুতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি বেড়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার উত্তর সিটিতে রোগী ভর্তি কম। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪২ জন রোগী উত্তরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন, আমরা তাঁদের প্রত্যেকের তথ্য নিয়ে দেখেছি, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৮ জন এই সিটির বাসিন্দা। বাকিরা বাইরের।’

মৃত্যু বেশি গতবারের চেয়ে

এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ৪৬ জন মারা গেছেন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। অন্যরা দেশের অন্যত্র মারা গেছেন। গত বছর (২০২৪) এ সময় ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৫৬ জন।

ডেঙ্গুতে এবারের মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাফিলতি, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অভাব এবং ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারের অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নেই। প্রতিটি হাসপাতালকে পরিচালন বাজেট থেকে ব্যয় করতে বলা হয়েছে। মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ রোগী আসছে অনেক দেরিতে। তখন আর চিকিৎসকের কিছু করার থাকে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুতে রোগী ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ সরকারের গতানুগতিক কাজ এবং অব্যবস্থাপনা। মানুষের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তের সুযোগ পৌঁছায়নি। নীতিনির্ধারণী স্তরে এ নিয়ে কোনো ভাবনা আছে, এমন একেবারেই মনে হয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ