প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ও ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ বাংলাদেশের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ছয়টি সংগঠন ও জোট। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অধ্যাদেশগুলো যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নাগরিকবান্ধব হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউসহ বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছে– অ্যাকসেস নাও, আর্টিকেল নাইন্টিন, পেন ইন্টারন্যাশনাল, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তিকালীন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যায়ে দেশটিতে বড় পরিসরে পদ্ধতিগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন হচ্ছে। এর মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা ও উপাত্ত সুরক্ষা আইনের সংস্কারও রয়েছে। ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার নীতি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো সংস্কারের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টাগুলোকে স্বীকৃতি দিচ্ছে ছয় সংগঠন ও জোট। তবে পর্যাপ্ত স্বচ্ছতা বা অংশগ্রহণমূলক আলোচনা ছাড়াই এই উদ্যোগগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।

এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাংবিধানিক পরিকাঠামো এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পরিকাঠামোয় উল্লেখ করা মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাইবার জগৎ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বৃহত্তর পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে এ দুই অধ্যাদেশের খসড়া। বরং প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশগুলোয় অস্পষ্ট, বিস্তৃত ও সুনির্দিষ্ট নয় এমন বিধানের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। এই বিধানগুলো অধ্যাদেশটির অপব্যাখ্যা, অপব্যবহার– বিশেষ করে মানবাধিকার ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির অধিকার খর্বের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। 

বিবৃতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার নিয়মনীতি সংস্কারে গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও তথ্য-প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অধ্যাদেশগুলো প্রণয়ন এবং সেগুলো যেন অধিকারভিত্তিক ও নাগরিকবান্ধব হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ