রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো সীমিত। সমাজে এখনো ঘরের কাজ ও সংসার সামলানোই নারীদের প্রধান দায়িত্ব বলে ধরা হয়। তবে সারা দেশের এই চিরচেনা বাস্তবতাকে বদলে দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি।

৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ৭ জন নারী শিক্ষার্থী। কমিটি ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান শাহিন ও সদস্যসচিব সমীর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কনিকা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন দেওয়ান নুসরাত।

কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও নারীদের প্রাধান্য ফুটে উঠছে। সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন পুষ্পা আক্তার, সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন আয়েশা সিদ্দিক পান্না ও মুক্তা আক্তার। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নূসরাত জাহান তনু ও নাজনীন আক্তার।

এই কমিটিতে পুরুষ সদস্য হিসেবে রয়েছেন দুজন। তানভীর মিয়া, যিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন। মো.

ইকবাল হোসেন পেয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক পদের দায়িত্ব।

কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক চর্চা ও সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সভাপতি নির্বাচিত হওয়া কনিকা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সারা দেশে নারীরা পিছিয়ে ছিল। কিন্তু জুলাই-আগস্টের বিপ্লব আমাদের শিখিয়ে গেছে নারীরা চাইলেই সব কিছু করতে পারে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের নেপথ্যে নারীদের ভূমিকা ছিল সবার আগে। তাছাড়া আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও চাইছেন নারী নেতৃত্ব এগিয়ে আসুক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, আমরা যখন নাসিরনগর গিয়ে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ করি তখন মেয়েরাই এগিয়ে আসে। সেখানে ছেলেদের খুব একটা এগিয়ে আসতে দেখিনি। তাছাড়া আমাদের দলের প্রধানও নারী তাই দলের নির্দেশনা অনুযায়ী নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের দলের লক্ষ্য।

ছাত্রদলের এই নতুন কমিটি নিয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন বলেন, নারীরা আর পিছিয়ে নেই। তারা পিছিয়ে থাকবে না। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বিএনপির সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের দেশনেতা তারেক রহমানের নির্দেশনা।

প্রসঙ্গত, কলেজ কমিটিতে নারী নেতৃত্বের এমন অংশগ্রহণ স্থানীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র আম দ র দ কম ট ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে। 

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন? 

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।

ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে। 
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা,  চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ
  • এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ