ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট, সঙ্গে নিতে হচ্ছে অন্য পণ্য
Published: 4th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের কারণে গ্রাহকদের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বোতলজাত তেল কিনতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে ক্রেতাদের। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকেরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার আনন্দবাজার, জগতবাজার, ফারুকী বাজার ও কাউতলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। যেসব দোকানে সয়াবিন তেল আছে, সেসব দোকান থেকে গ্রাহকদের অন্যান্য মালামাল কিনতে বাধ্য করছেন দোকানিরা।
ব্যবসায়ী ও ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফ্রেশ কোম্পানির বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য ১৭৫ টাকা ও তিন লিটার ৫২৫ টাকা, ক্যানুলা তীরের দুই লিটার তেলের দাম ৩৮৫ টাকা ও ৫ লিটারের দাম ৮৫২ টাকা। রূপচাঁদা পাঁচ লিটার বোতলের পাইকারি দাম ৮৪২ টাকা ও খুচরা দাম ৮৫২ টাকা এবং পুষ্টির পাঁচ লিটারের পাইকারি দাম ৮৪২ ও খুচরা দাম ৮৪৫ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, তীর ক্যানুলার পাঁচ লিটার বোতলের সঙ্গে ময়দা এবং রূপচাঁদার ৫ লিটার তেলের সঙ্গে রূপচাঁদা চাল দিচ্ছেন ডিলাররা। এক কার্টনে পাঁচ লিটারের চারটি বোতল থাকে। তীর তেলের এক কার্টনের সঙ্গে ২৪ কেজি ওজনের এক বস্তা ময়দা ধরিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তেলের সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে আটা, ময়দা ও চাল কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে তাঁরা গ্রাহকদের কাছ থেকে তেলের সঙ্গে অন্যান্য মালামাল বিক্রি করছেন।
কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের কারণে তেলের দাম বেড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ৮৫২ টাকা মূল্যের পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল ৯৭০ থেকে ১ হাজার টাকা নিচ্ছে।
জগতবাজারের সোহেল বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী সোহেল মিয়া বলেন, প্রতিদিন গড়ে তাঁর দোকানে পাঁচ লিটারের ১০টি বোতল খুচরা বিক্রি হয়। কিন্তু গত এক মাসে ১০ কার্টনও তেল পাননি। এক কার্টনে পাঁচ লিটারের মাত্র চারটি বোতল থাকে।
মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হলে ৫০০ টাকার বাজার করতে হচ্ছে। দুই ও তিন লিটারের তেল নিতে ন্যূনতম ১৫০ টাকা সদায় কিনতে হচ্ছে। একজন ক্রেতার কাছে একটি বোতলের বেশি বিক্রি করা হচ্ছে না। রমজান মাসে তেল বেশি লাগে। ৫০০ টাকার বাজার করে ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনেছেন। সংকট দূর না হলে তাঁর মতো ক্রেতাদের রোজায় আরও বিপাকে পড়তে হবে।
মেসার্স আরিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও তীর কোম্পানির ডিলার আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তেলের তীব্র সংকট। দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে সয়াবিন তেল নেই। কোম্পানি থেকে সয়াবিন তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন না। কোম্পানি থেকে তেলের সঙ্গে তাঁদের আটা ও ময়দা ধরিয়ে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দোকানে আটা-ময়দা বিক্রি করেন বলে তেলের সঙ্গে আটা-ময়দা নেন। এরপরও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘কোম্পানি তেল সরবরাহ না করলে আমরা দোকানিরা কীভাবে ও কোথা থেকে দেব?’
রূপচাঁদা কোম্পানির ডিলার জুয়েল খান বলেন, বসুন্ধরার সয়াবিন তেল জেলায় আসছে। রূপচাঁদার তেল ব্যবসায়ীদের দেওয়া হচ্ছে। তবে তিন দিন আগে রূপচাঁদা তেলের গাড়ি এসেছিল। ৩০ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করেছেন। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকার সয়াবিন তেল ও ১০ লাখ টাকার চাল দিয়েছে। তাঁদের বিক্রয় প্রতিনিধিরা এসব চাল বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পরিচালক ফতেখারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। তবে এটি স্থানীয় সমস্যা না। কোম্পানিগুলো তেলের সঙ্গে বিভিন্ন জিনিস ডিলারের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন। আশা করছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি না ধরায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ব যবস য় তলজ ত ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জের শাহজীবাজার কেন্দ্রে আগুন, ১৫ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
হবিগঞ্জের শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুরো জেলা ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহজীবাজার ৩৩/১১ কেভি স্টেশনের সুইচিং ব্রেকারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। পরে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়।
এ তথ্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল মুর্শেদ।
এর আগে শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন কর্মী সাংবাদিকদের জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ সিটি ও ব্রেকারে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ সরবরাহকেন্দ্র ও পুরো জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।