উৎসবে পোশাকে ‘গর্জিয়াস ভাইভ’ না থাকলেই যেন নয়! কিন্তু প্রকৃতিতে একটু একটু করে গরম বাড়ছে তাই পোশাকটি গর্জিয়াস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়কও হওয়া চাই। এই দুই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঈদ পোশাক তৈরিকে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশের ফ্যাশন জগতের উদ্যোক্তারা। ফ্যাশন হাউস ঋতি’র স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার মুসাররাত নওশাবার ঈদ কালেকশন সম্পর্কে জানাবো আজকের এই আয়োজনে।
ঋতি’র ঈদ কালেকশনে বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছে শাড়ি আর পাঞ্জাবী। মুসররাত নওশাবা বলেন, ‘‘বরাবরের মতোই এবারের ঈদ কালেকশনে আমি শাড়ি রাখছি। কারণ আমি শাড়ি ডিজাইন করতে খুব পছন্দ করি। এবারের ঈদ কালেকশনে থাকলে কাপল সেট, কিছু টপস আনার চেষ্টা করছি। ইয়াং জেনারেশনের মেয়েরা এটা পছন্দ করবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রকৃতিতে আস্তে আস্তে গরম চলে আসছে তাই গরমে যাতে পোশাকগুলো আরামদায়ক হয় সেই অনুাযায়ী পোশাকের ফেব্রিক বেছে নিয়েছি। ফেব্রিকে সব সময় চেষ্টা করি একটু ভিন্ন ধরণের রং আনার জন্য। যেহেতু উৎসব সেজন্য ফেব্রিকে অরগাঞ্জা, সেমি সিল্ক ফেব্রিক বেছে নিয়েছি। সেমি সিল্কটা একটা গর্জিয়াস ম্যাটেরিয়াল। এটার সঙ্গে থাকছে সেমি মসলিন আর সাথে তো সুতি থাকছেই।’’
আরো পড়ুন:
পোশাকে থাকুক আরাম আর উৎসবের আমেজ
বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
সবমিলিয়ে ঋতি’র এবারের ঈদ কালেকশনে শাড়ি, টপস, পাঞ্জবীতে প্রাধান্য পেয়ে বাংলার প্রকৃতি, সুরমা, ভায়োলেট, পুস ইন টু রংকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শাড়ির মধ্যে ডিজিটাল প্রিণ্ট শাড়িকে বেশি কালারফুল করা হয়েছে। এছাড়া একটি থিমেটিক ডিজাইন নিয়ে এসেছে ঋতি। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘পাখির চোখে বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের যত ধরণের রং আছে, যেমন নদী, মাঠ, ঘাট এগুলোর আলাদা রং ও রংয়ের শেড রয়েছে। বাংলার এমন রং নওশাবা তুলে এনেছেন তার ডিজাইন করা শাড়ির জমিনে। পাঞ্জাবী তৈরি হয়েছে সুতি এবং ভিসকস ফেব্রিকে।
নওশাবা বলেন, ‘‘এই থিমেটিক কাজটি করার ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করেছে বাংলাদেশের আর্টিস্ট পেইজ ‘ড্রপস’। আমি চেষ্টা করেছি এই শাড়ির মাধ্যমে বাংলাদেশের ন্যাচারাল রিসোর্স, মাঠ, ঘাট, নদী, নানা রকমের ফসলের রং তুলে আনার জন্য।’’
ঈদের দিন নিজেও শাড়ি পরবেন নওশাবা। তিনি বেছে নেবেন সেমি মসলিনের ডিজিটাল প্রিণ্ট শাড়ি। এই ফেব্রিককে আরামদায়ক মনে করেন নওশাবা।
দরদাম: ঋতি’র সবচেয়ে দামী শাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে অরগাঞ্জার অর্নামেন্টের শাড়ি। এই শাড়িতে ব্লক, স্টোন ওয়ার্ক, ম্যাচিং টার্সেল এবং পাড়ে লেস লাগানো হয়েছে। দাম পড়বে সর্বোচ্চ ২৯৫০ টাকা। সুতি শাড়ির দাম শুরু ২০০০ টাকা থেকে। হাতে কাজ করা সুতি শাড়িগুলোর দাম পরবে ২৮০০ টাকা। পাঞ্জাবীর দাম রাখা হয়েছে ১৬৫০ টাকা।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ প শ ক র ঈদ ক ল কশন ড জ ইন নওশ ব
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।