জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শাখা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ৯৪ জনসহ মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা চোখে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সুজন মোল্লা বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সুজন মোল্লা বলেন, “আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিপরীত পাশে স্টার হোটেলের সামনে আমার চোখে গুলি লাগে। শুধু এ ঘটনাই নয়। বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তাদের বিরুদ্ধেই এ মামলা করা হয়েছে।”

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বাকি আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আরাফাত এ রহমান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এ মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষক ও পাঁচজন কর্মকর্তা রয়েছেন। শিক্ষকরা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড.

অরুণ কুমার গোস্বামী, ড. আনোয়ারা বেগম, জবি নীলদলের অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস, ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন, আইইআর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ, অগাস্টিন পিউরীফিকেশন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সিকেন্দার।

কর্মকর্তারা হলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকতা সমিতির সভাপতি কাজী মনির, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলতাফ হোসেন ও ইমরান হোসেন ইমন, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার পদে নিয়োজিত কর্মকর্তা টুটুল আহমেদ, জবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও স্টোরকিপার সুমন হাসান সোহান।

এছাড়া জবি ছাত্রলীগের ৭৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইন, সাবেক সভাপতি এফএম শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি হিমেলুর রহমান হিমেল, সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল, ছাত্রলীগ নেতা মেনন মাহফুজ, সহ-সভাপতি পরাগ হোসাইন, ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলাম রবি, আব্দুল বারেক অন্যতম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিপরীত পাশে স্টার হোটেলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে জবি ছাত্রদল। এ সময় আসামিরা বেআইনিভাবে জনতাবদ্ধে পরিকল্পিতভাবে গুলিবর্ষণ ও মারপিট করলে জবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা চোখে গুলিবিদ্ধ হন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স জন ম ল ল কর মকর ত ল ইসল ম মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে পাকিস্তান

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। গত বুধবার রাতে দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এর ফলে পারস্পরিক শুল্ক কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। যদিও কোনো দেশই নির্দিষ্টভাবে শুল্কহার নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি।

এদিকে, চুক্তির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের তেলসম্পদ উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর ডনের।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। পাল্টা শুল্ক নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। বুধবারই তাঁর সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের বৈঠক হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে জানায়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বাজার প্রবেশাধিকার জোরদার করা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ ও পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করাই এ চুক্তির মূল লক্ষ্য।

পাকিস্তান দূতাবাস আরও জানায়, চুক্তির ফলে পাকিস্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কমবে। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আরও ভালো হবে। অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়বে।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। এখন থেকে দেশটির বিশাল তেলসম্পদের উন্নয়নে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে।’ ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘আমরা এখন তেল কোম্পানি বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় আছি। কে জানে, একদিন হয়তো পাকিস্তান ভারতেও তেল রপ্তানি করবে!’

তবে চুক্তিটির বিস্তারিত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এ চুক্তির বিষয়ে আজ সকালে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি এক্সে লেখেন, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি আমাদের স্থায়ী অংশীদারত্বকে আরও জোরদার করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে এমন একটি চুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে আমি কৃতজ্ঞ।’

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আওরঙ্গজেব চুক্তিটিকে ‘উইন-উইন’ বা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক বলে বর্ণনা করেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘যে যাত্রা আমরা কয়েক মাস আগে শুরু করেছিলাম, আজ তা সফলভাবে শেষ হলো।’

আওরঙ্গজেব আরও বলেন, ‘শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি অশুল্ক বাধা, বাণিজ্য ভারসাম্য ও শুল্ক কাঠামোর পুনর্মূল্যায়ন নিয়েও আমরা কাজ করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ