‘ক্রীড়া সংস্থাকে কারো পার্টি অফিস বানাতে দেব না’
Published: 6th, March 2025 GMT
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিকাশ ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে তিন কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুধীজন, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “কুষ্টিয়া সংস্কৃতি চর্চার একটি অন্যতম কেন্দ্র। কুষ্টিয়ায় সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিকাশে এবং স্থানীয় উন্নয়নমূলক কাজ ও জরুরি কাজের জন্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের জন্য তিন কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ ঘোষণা করছি।”
তিনি বলেন, “ক্রীড়া সংস্থাকে কারো পার্টি অফিস বানাতে দেব না। প্রকৃত ক্রীড়া অনুরাগী ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের মাধ্যমে আগামীতে ক্রীড়া সংস্থা পরিচালিত হবে। তারা প্রত্যেকটি ক্রীড়া সংস্থার কমিটিকে পার্টি অফিস বানিয়ে রেখেছিল। সে কারণে সার্বিকভাবে ক্রীড়ার কোনো উন্নতি হয়নি। টুর্নামেন্টের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আমরা শুধু কমিটি করেই ক্ষান্ত হব না। তারা কীভাবে কী কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে কি-না, সেই সব রিপোর্ট নেব এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। বিপ্লবোত্তর সময় পার করছি। পৃথিবীর কোনো দেশেই জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা করার কোনো উদাহরণ নেই। ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যেকটা ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে।”
দেশের রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা গণহত্যায় জড়িতের বিচারসহ অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সার্বিকভাবে নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে সহযোগিতা করবেন।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো.
এর আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা শহীদ আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে যান। সেখানে তিনি আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। পরে আবরারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আবরার ফাহাদ জামে মসজিদের সম্প্রসারণ কাজের ফলক উন্মোচন করেন। এরপর শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শিল্পকলা একাডেমির মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবর র ফ হ দ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।