নড়াইলে বিএনপির অফিসে বোমা বিস্ফোরণ, আহত ৩
Published: 8th, March 2025 GMT
নড়াইল সদরের গোবরা বাজারে স্থানীয় বিএনপি অফিসে বোমা বিস্ফোরণে ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু মোল্যাসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া ওয়াজেদ আলী তিতুমীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদরের গোবরা নতুন স্ট্যান্ডে বিএনপি অফিসের ভেতরে গোবরা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু মোল্যা, জাফর আলীর ছেলে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ওয়াজেদ আলী তিতুমীর ও একই এলাকার স্বঘোষিত বিএনপি নেতা নিউটন গাজীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী বসে গল্প করছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাদেরকে লক্ষ্য করে অতর্কিতভাবে তিনটি বোমা হামলা করে দুটি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের পর নিউটন গাজী নিজেকে বিএনপির কর্মী বলে দাবি করতে থাকেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বহিষ্কৃত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি উজ্জ্বল শেখ গ্রুপের সাথে একই এলাকার নিউটন গাজীর গ্রুপের গত দু’বছর ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য বিরোধ চলে আসছিল। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার সাথে পূর্বের বিরোধের সম্পর্ক থাকতে পারে।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম পলাশ বলেন, শুনেছি গোবরা বাজারে বোমার আঘাতে তিনজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বাবু মোল্যা ও ওয়াজেদ আলী তিতুমীর বিএনপির নেতাকর্মী। অন্যজন নিউটন গাজী বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তিনি এ ঘটনার কারণ বলতে পারেননি।
নড়াইল সদর থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান
লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।
তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।