কার্জন হলে ঢুকতে না পারার আক্ষেপ মিটল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে
Published: 8th, March 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে তিন বন্ধু ঘুরতে গিয়েছিলেন ১ ফেব্রুয়ারি। বহিরাগত বলে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ কারণে তাঁরা ওই দিন আক্ষেপের মুহূর্তটি ভিডিও করে রাখেন। দৃঢ়প্রত্যয়ে তাঁরা বলেছিলেন, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণ হবেনই। এরপর ছাত্র হিসেবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন। শেষমেশ সেটিই হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলের মেধাতালিকায় তিন বন্ধুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিট তথা কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির জন্য উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরপরে ১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি মু.
ওই তিন বন্ধুর একজনের নাম মু. আশিকুর রহমান আফ্ফান (১৪৬৩তম)। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার মুসলিমপাড়ায়। তাঁর বাবা প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমান। অপর দুই শিক্ষার্থী হলেন লক্ষ্মীপুরের জাবেদ আলী (৩৯৯তম) ও শরীয়তপুরেরে মুঈন জিসান (৩৭তম)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল প্রকাশের পর আশিকুর রহমান তাঁর প্রকাশিত ভিডিওর ক্যাপশনে লেখেন, ‘বহিরাগত হওয়ার জন্য আমিসহ আমার বন্ধুদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি কার্জন হলে। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা তিনজনই এখন ঢাবিয়ান। একজন আবার ৩৭তম! এবার আমাদের ঢাবিতে না ঢুকতে দেওয়ার সাধ্য আছে কার? মহান রব ব্যতীত।’
১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কার্জন হলে ঘুরতে আসছিলাম, আমাদের ঢুকতে দেয়নি। আজ ১ ফেব্রুয়ারি। আমরা স্টুডেন্ট হিসেবে একদিন এখানে ঢুকব, ইনশা আল্লাহ। আমরা একসঙ্গে ছবি তুলব। চান্স পাওয়ার পর ভিডিওটা ছাড়ব।’
আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেদিন শুধু ঘুরতে গিয়ে ঢুকতে না পারার কষ্ট পেয়েছিলাম। এখন আমি নিজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী! এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। ঢাবির প্রতি আমাদের রাগ–ক্ষোভ কিছুই ছিল না, যাঁরা আমাদের ঢুকতে দেয়নি, তাঁরা নিয়ম মেনেই ঢুকতে দেয়নি। এ কারণে তাঁদের প্রতি রাগ ক্ষোভ নেই। বিষয়টি আমরা পজিটিভভাবে নিয়েছিলাম। এখন তাঁদের স্বপ্নের দুয়ার খুলে গেছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’