মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার তিন বছরের শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান। পাশাপাশি মামলার ব্যয়ভার বহন এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সোমবার রাতে ফোনে ওই শিশুর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন নাসের রহমান। এসময় তিনি শিশুটির চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করবেন বলে জানান। একই সঙ্গে মামলার সঠিক চার্জশিট দিতে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

শিশুটির মা জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি বলেন, “বাসার মালিক আমাকে হুমকি দিচ্ছেন, কারণ আমি পুলিশের কাছে নির্যাতনের প্রমাণের কথা বলেছি। ঘটনার দিন তারা শিশুটিকে হাসপাতালে পর্যন্ত যেতে দেয়নি।”

এ সময় নাসের রহমান তাকে আশ্বস্ত করেন এবং আইনি লড়াইয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ৩ মার্চ সকালে বড়লেখা পৌরসভার গাজিটেকা-আইলাপুর এলাকার একটি দোকান থেকে চকলেট কিনতে গিয়ে ওই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি, দোকান মালিক নজরুল ইসলামের ছেলে রেদওয়ান ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার রাতে মৌলভীবাজার থেকে একটি প্রতিনিধি দল শিশুটির মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জনি আহমেদ, ছাত্রদল নেতা আখলাকুর রহমান জাবের, জামিল আহমেদ তানভীর ও জুবেদ হোসেন।

তারা শিশুটির জন্য ফল ও চকলেট নিয়ে যান এবং শিশুর মায়ের হাতে নাসের রহমানের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।

ছাত্রদল নেতা জনি আহমেদ বলেন, “শিশুটির চিকিৎসা ও আইনি লড়াইয়ের সমস্ত ব্যয় নাসের রহমান বহন করবেন।”

বর্তমানে শিশুটি সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নাসের রহমান জানিয়েছেন, শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনি প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন স র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ