মানুষ নামের মানুষে জগৎ সয়লাব: আফজাল হোসেন
Published: 15th, March 2025 GMT
নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী এ গুনী মানুষটি লেখালেখিও করেন। প্রায় সময়ই তাঁর লেখায় উঠে আসে সবসাময়িক নানা বিষয়। এবার তার লেখায় উঠে এল মাগুরায় নির্যাতিত শিশুর মৃত্যুর বিষয়। আজ শনিবার নিজের ফেসবুকে অভিনেতা লিখেছেন, ‘ছোট্ট আছিয়া সামান্য কয়দিনের দুনিয়াদারী করতে এসে বুঝে গেল, এটা নরক। ভালো করেই জেনে গেছে, মানুষ নামের মানুষে জগৎ সয়লাব- আসল মানুষ তেমন নেই।’
এরপর লেখেন, ‘স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও আরও এক দফা বুঝিয়ে দিলেন, শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষের কৃতজ্ঞতা বা গৌরববোধ নেই- তার বদলে নানা প্রকারে মানুষ প্রমাণ দিতে চায়, কতটা নিকৃষ্ট তারা হতে পারে!’
অভিনেতার কথায়, ‘চলে গেল আছিয়া। জীবিতকালে তাকে সন্মান দেখাতে না পারি, মৃত্যুর পর অনেকটাই বোঝাতে পেরেছি, সন্মান দেখানোয় আমরা কতটা দক্ষ, আন্তরিক। দুঃখজনক হচ্ছে, দক্ষতা, আন্তরিকতা প্রকাশ করতে আমাদের কোনো না কোনো উপলক্ষ্েযর প্রয়োজন পড়ে।’ তিনি যোগ করেন, ‘নিপীড়ন, অত্যাচার, অবমাননায় কারও মৃত্যু হলে- তখনই সে জীবন সন্মান, মর্যাদাপ্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে ওঠে। তখনই কেবল সে জীবনের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রদর্শনের তাগিদ অনুভব করি। আমরা এই মানুষ পরিচয়ের প্রাণীরা অসভ্যতা, বর্বরতায় খুব একটা বিব্রত, পীড়িত, অসন্মানিতবোধ করি না- বয়স বিবেচনায় বর্বরকাণ্ডে সমাজসহ শিউরে উঠি।
তার কথায়, ‘কোনো লজ্জা, ঘৃণা বা অতিরিক্ত বেদনার ঘটনা কেউ বেশিদিন মনে রাখে না। আছিয়াকেও মনে থাকবে না কারও কিন্তু নিজের জীবনের বদলে মানুষ ও সমাজের কুৎসিত রূপ সে খুব বড়, স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়ে গেল। বুঝিয়ে দিয়ে গেল, তার জন্ম হয়তো সাধারণ ঘটনা ছিল কিন্তু ছোট্ট সে জীবন মানুষের দায়িত্ব কর্তব্েয নয়, নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতাতেই বিশেষ হয়ে উঠতে পেরেছে।’
সবশেষে লিখেছেন, ‘নিকৃষ্ট ও শ্রেষ্ঠত্বের মাঝখানে ভেদ যে বিশেষ নেই, তা কি বোধগম্য হয়েছে আমাদের? হবে কোনোদিনও?
প্রসঙ্গত, মাগুরায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় ছিল সারাদেশ। ৮ বছরের শিশুটি বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার হয়। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আছিয়া।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন অভ ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায়নি কেউ
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম রাতেই যেন ফুটবলপ্রেমীরা এক অসাধারণ ম্যাচের সাক্ষী হলো। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তুরিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জুভেন্টাস ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৪-৪ গোলে ড্র করেছে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, ঠিক তখনই জুভেন্টাসের নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে সবাই হতবাক হয়ে যায়।
ম্যাচের নায়ক ছিলেন জুভেন্টাসের সেই খেলোয়াড় যাকে ক্লাব এই গ্রীষ্মে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল, দুসান ভ্লাহোভিচ। ২৫ বছর বয়সী এই সার্বিয়ান ফরোয়ার্ড বদলি হিসেবে নেমে যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। দুটি গোল করার পাশাপাশি ইংরেজ ডিফেন্ডার লয়েড কেলির গোলে সহায়তাও তিনিই করেছেন। নির্ধারিত সময়ের পরও যখন ডর্টমুন্ড ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল, সেই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে এই অবিশ্বাস্য ড্র নিশ্চিত করেন ভ্লাহোভিচ।
আরো পড়ুন:
এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়
মেসির গোলে, অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়
ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। ৫২তম মিনিটে ডর্টমুন্ডের করিম আদেয়েমি বাম পায়ের শটে বক্সের বাইরে থেকে প্রথম গোলটি করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপরই জুভেন্টাসের তরুণ তারকা কেনান ইলদিজ ডান দিক থেকে নেওয়া এক শটে বল জালে জড়িয়ে সমতা ফেরান। কিন্তু জুভেন্টাস সমর্থকদের এই আনন্দ খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। কারণ, মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আদেয়েমি আবার মাঠে ঝলসে ওঠেন এবং তার পাস থেকে ফেলিক্স এনমেচা বক্সের বাইরে থেকে ডর্টমুন্ডের দ্বিতীয় গোলটি করে বসেন।
ম্যাচের এমন টানটান উত্তেজনার মধ্যেই ৬৭তম মিনিটে ইলদিজ দুর্দান্ত একটি পাস বাড়িয়ে দেন ভ্লাহোভিচের দিকে। ভ্লাহোভিচ ডান পায়ের শটে সহজেই গোল করে স্কোর ২-২ করেন। এরপর আবার ডর্টমুন্ড এগিয়ে যায়। ৭৪তম মিনিটে ইয়ান কৌটো এবং ৮৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে বেনসেবাইনি গোল করেন। লয়েড কেলির হ্যান্ডবলের কারণে এই পেনাল্টি পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। যখন মনে হচ্ছিল, ডর্টমুন্ড ৪-২ গোলে জয়ী হতে চলেছে, ঠিক তখনই ভ্লাহোভিচ জুভেন্টাসকে বাঁচিয়ে দিলেন।
ম্যাচের ৯০+৩ মিনিটে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন পিয়ের কালুলুর ক্রস থেকে ভ্লাহোভিচ ৯০+৪ মিনিটে সরাসরি শটে গোল করে ব্যবধান ৪-৩ করেন। এবং নাটকীয়তার শেষ এখানেই নয়! ৯৬তম মিনিটে জুভেন্টাসের কেলি গোল করে বসেন এবং ৪-৪ সমতা ফেরান। শেষ পর্যন্ত এই সমতা নিয়েই শেষ হয় ম্যাচ।
দুই দলের এমন গোল উৎসব চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই নিয়ে সপ্তমবার ঘটল, যেখানে উভয় দলই অন্তত চারটি করে গোল করেছে।
এবারের লিগ-পর্বের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শীর্ষ আটটি দল সরাসরি শেষ ষোলোতে যাবে এবং পরের ১৬টি দল দুই লেগের প্লে-অফ খেলবে। সেই প্লে-অফ থেকে আরও আটটি দল শেষ ষোলোতে সুযোগ পাবে।
ঢাকা/আমিনুল