‘আপনার টাকা পড়েছে’ বলে শিক্ষকের তিন লাখ টাকার ব্যাগ নিয়ে পালায় ছিনতাইকারী
Published: 19th, March 2025 GMT
যশোরের কেশবপুরে অভিনব কৌশলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে পৌর শহরের প্রধান সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মো. রায়হান আল মাহমুদ। তাঁর বাড়ি কেশবপুর পৌরসভার বাজিতপুর গ্রামে। তিনি আলতাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে বাড়ি থেকে একটি ব্যাগে তিন লাখ টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখতে মোটরসাইকেলে পৌর শহরের প্রধান সড়কের একটি শোরুমের সামনে দাঁড়ান শিক্ষক রায়হান আল মাহমুদ। মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলে টাকার ব্যাগটি ঝোলানো ছিল। এ সময় এক ছিনতাইকারী তাঁর মোটরসাইকেলের পাশে কয়েকটি দুই ও পাঁচ টাকার নোট ছড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘আপনার টাকা পড়ে গেছে।’ তখন ওই শিক্ষক নিজের প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে তাঁর টাকা পড়েছে কি না দেখতে থাকেন। এই সুযোগে ছিনতাইকারী শিক্ষকের মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলে রাখা টাকার ব্যাগটি নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঈদের আগে এ ধরনের প্রতারক চক্র শহরে ঘোরাঘুরি করছে। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
যোগাযোগ করলে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ঘটনাটি শোনেননি। ঈদের আগে প্রতারক চক্রের হাতে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সে জন্য পুলিশের একটি দল শহরে টহল দিচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।