কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনে মারা যাওয়া হাতিটি অসুস্থ হয়ে নয়, গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি কর্মকর্তা হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন এ প্রতিবেদন দিয়েছেন।

কক্সবাজার বন বিভাগীয় কর্মকর্তা (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, হাতিটি মারা যাওয়ার পর উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। হাতিকে কে কীভাবে গুলি করেছে, তা খুঁজে বের করার জন্য উখিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো.

শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল। তারা মঙ্গলবার উখিয়ার ইনানী সংরক্ষিত বনে জাকিরের ঘোনায় একটি খামারবাড়ি থেকে দেশি একনলা বন্দুক উদ্ধার করেছে। পরে বন্দুকটি উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে, হাতিকে কে গুলি করেছে।

গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উখিয়ার জুমছড়ি সংরক্ষিত বনে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়। ওই সময় রক্তবমি করতে করতে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মৃত এ পুরুষ হাতিটার বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর।

প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বনকর্মীরা তখন জানিয়েছিলেন, উখিয়ার ইনানী পাহাড়ি এলাকা থেকে একটি হাতি রক্তবমি করতে করতে জুমছড়িতে গিয়ে মারা যায়। দীর্ঘদিন ধরে হাতিটি অসুস্থ ছিল।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর সংরক্ষিত বনে একটি হাতির মৃত্যু হয়। একইভাবে ১৮ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা সংরক্ষিত বনে ও ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর দুটি হাতির মৃত্যু হয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ৩৫ দিন ধরে নিখোঁজ ব্যক্তির গলিত লাশ পাওয়া গেল সেপটিক ট্যাংকে

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায় নিখোঁজের এক মাসের বেশি সময় পর করিম ভূঁইয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তির গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রসুলপুর গ্রামে গোমতী নদীর সংযোগ খালের ওপর নির্মিত সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

করিম ভূঁইয়া উপজেলার বড়শালঘর এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় কৃষক ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে করিমের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (৪০), দুই ছেলে তানজিদ ভূঁইয়া (২২) ও তৌহিদ ভূঁইয়া (২০), স্ত্রীর ভাই মোজাম্মেল হক (৪২), ইশরাফিলসহ (৩৮) ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন করিম ভূঁইয়া। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা প্রচার করতে থাকেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় খড়মপুরে অবস্থিত হজরত সৈয়দ আহম্মদ (রহ.)-এর দরগায় যাওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ। এ ঘটনায় করিমের বড় ভাই আমির হোসেন ভূঁইয়া ১৬ আগস্ট দেবীদ্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আমিরের মুঠোফোন নম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কল আসে। ওই ব্যক্তি আমিরকে জানান, করিমের শ্বশুরবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় খোঁজ করলে তাঁকে (করিম ভূঁইয়া) পাওয়া যাবে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে রসুলপুর গ্রামে করিমের শ্বশুরবাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। একপর্যায়ে করিমের শ্বশুরের পরিবারের নির্মাণাধীন একটি সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খোলা হয়। সেখানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় করিম ভূঁইয়ার গলিত লাশ দেখতে পান তাঁরা।

করিমের স্ত্রী তাছলিমা, দুই ছেলে ও স্ত্রীর দুই ভাই মিলে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আমির হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পরিবারের লোকজন থানায় কোনো জিডি করেনি, আমি নিজে থানায় গিয়ে জিডি করি। সর্বশেষ আজ ভাইয়ের গলিত লাশ পেলাম।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। আটক ছয় ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ