ঝালমুড়ি বিক্রেতার পরিবারের পাশে তারেক রহমান
Published: 21st, March 2025 GMT
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত ঝালমুড়ি বিক্রেতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জসিম উদ্দিনের পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামে নিহত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী শাহানা বেগমের হাতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ঈদসামগ্রী ও নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেন ফাউন্ডেশনের সদস্য ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো.
ঝালমুড়ি বিক্রেতা জসিম উদ্দিন গত বছরের ২ আগস্ট ঢাকার বনশ্রী এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে গুলিতে নিহত হন। তার মরদেহ স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার চাচা কালা মিয়া শনাক্ত করেন। সেদিন রাতে ময়না তদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ঈদ উপহার পেয়ে নিহত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী শাহানা বেগম বলেন, ‘‘আমার স্বামী ঢাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। তার মৃত্যুর পর আমাদের পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ নেই।’’ ৫ সন্তান নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার পাশপাশি স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেছেন তিনি।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সদস্য প্রকৌশলী নাজমুল হুদা খন্দকার বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে নিহত হন জসিম। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জসিমসহ গণঅভ্যুত্থানে সকল হতাহতদের পরিবারের মাঝে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন থেকে ঈদ উপহার প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া হতাহতদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’’
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিহত ৮ জনের পরিবারের মাঝে এসব উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
মাইনুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব র র ম ঝ দ র পর ব র র ঈদ উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ