কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি আফজাল মেহেরপুরে গ্রেপ্তার
Published: 24th, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের (নিকলী-বাজিতপুর উপজেলা) সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনকে মেহেরপুর শহর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আফজাল সুজের মালিক ও বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
গত রোববার মধ্যরাতে শহরের সরকারি কলেজ মোড়ের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মেহেরপুর জেলার পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আফজাল হোসেনের আশ্রয়দাতা আফজাল সু কোম্পানির কর্মচারী মামুন হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। মামুন মেহেরপুর শহরের তাহের ক্লিনিকপাড়ার বাসিন্দা।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি টিম মেহেরপুরে এলে রাতেই তাদের কাছে সাবেক এমপি আফজাল হোসেনকে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ টিমের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ও সাবেক এমপির নামে ঢাকায় মামলা থাকায় তাঁকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সূত্র জানায়, সোমবার ভোরে জেলার মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল সাবেক এমপি আফজালের। এজন্য সীমান্তের একটি চক্রের সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার চুক্তিও করেন তিনি। কে বা কারা তাঁকে ভারতে পালাতে সহায়তা করছিল, তা পুলিশ তদন্তের স্বার্থে জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থানার ওসি মুরাদ হোসেন জানান, সাবেক এমপি আফজালের নামে আব্দুল কুদ্দুস হত্যাসহ বিভিন্ন ধারায় ৯টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বাজিতপুর থানায় আটটি ও কিশোরগঞ্জ থানায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর নামেও একটি মামলা রয়েছে।
এছাড়া ঢাকাতেও আফজালের নামে মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এ প্রেক্ষাপটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ আফজাল হোসেনকে ধরতে তৎপর ছিল।
আফজাল ২০০৮ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি টানা চারবার সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে খাল, বিল ও নদী দখল এবং প্রতিপক্ষের লোকজনকে দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন স ব ক এমপ ক শ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।