এইচপিতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিদেশি কোচিং প্যানেল চেয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয়। তাঁর সে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছিল আংশিক। প্রধান কোচ ডেভিড হেম্পের সঙ্গে পেস বোলিং কোচ কলি মুরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ বছর এইচপির কোচিং প্যানেলে যোগ হতে পারেন আরও দু’জন বিদেশি। 

স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে পাকিস্তানের সাবেক স্পিনার আরশাদ খানকে। বিসিবির সঙ্গে কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়েছে ৫৪ বছর বয়সী এ কোচের। এইচপির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম জানান, সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী স্পিন কোচের নিয়োগ নিয়ে কাজ করছেন। ব্যাটে-বলে মিলে গেলে প্রথমে খণ্ডকালীন নিয়োগ দেওয়া হতে পারে তাঁকে। স্পিন কোচের সঙ্গে একজন বিদেশি ফিল্ডিং কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

বিসিবিতে পাকিস্তানি স্পিন কোচের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সাকলায়েন মুশতাকের উত্তরসূরি হিসেবে কাজ করছেন মুস্তাক আহমেদ। তিনি কাজ করেন জাতীয় দলের সঙ্গে। সিরিজভিত্তিক কাজের জন্য দিন চুক্তিতে নিয়োগ তাঁর।

বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্টে লেগ স্পিন কোচ হিসেবে কাজ করছেন শাহেদ মাহমুদ। ঢাকা লিগে খেলা এই লেগি খেলা ছেড়ে কোচিং পেশাকে বেছে নেন। বিসিবির সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ নিয়োগ দেন শাহেদকে। দেশে লেগ স্পিনার হান্টের কাজ করছেন তিনি। জেলায় জেলায় ঘুরে লেগ স্পিনার বাছাই করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

২০ লেগ স্পিনারকে নিয়ে একাধিক ক্যাম্প করেছেন শাহেদ। মূলত স্পিন বোলারদের একই প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে এইচপিতেও পাকিস্তানি কোচ নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মাহাবুবুল আনাম বলেন, ‘সোহেল ছাড়া এ পর্যায়ে কোনো স্পিন কোচ নেই। এইচপিতে একজন বিদেশি স্পিন কোচ থাকলে ছেলেরা শিখতে পারবে। কারণ, এইচপিতেই শেখার জায়গা। এ কারণে আরশাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। প্রথমে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। কাজ পছন্দ হলে দীর্ঘ মেয়াদে চিন্তা করব। তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার বড় কারণ হলো, গেম ডেভেলপমেন্টে কাজ করছেন শাহেদ মাহমুদ লেগ স্পিন নিয়ে। মুশতাক জাতীয় দলের সঙ্গে আছেন। বয়সভিত্তিক আর জাতীয় দলের মাঝের ধাপ হলো এইচপি। এই জায়গায় বেসিক নিয়ে কাজ করা হয়। এই পর্যায়ে বিশেষায়িত কোচ বেশি প্রয়োজন।’

ছয় ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার আরশাদ পাকিস্তান নারী দলের স্পিন কোচ। ৯টি টেস্ট ও ৫৪টি ওয়ানডে খেলা আরশাদ ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৯৩ সালে ওয়ানডে অভিষেক তাঁর। টেস্ট অভিষেক ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৫৮ ওয়ানডে খেলে ৫৬ উইকেট শিকার করেন তিনি। ৯টি টেস্ট খেলে নিয়েছেন ৩২ উইকেট। ৬০১টি প্রথম শ্রেণির আর ১৮৯টি লিস্ট-এ উইকেট পেয়েছেন আরশাদ। 

খেলা শেষ করে ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। জীবিকার প্রয়োজনে সিডনিতে ট্যাক্সি চালাতেন। ২০২০ সালে কোচিং পেশায় যোগ দেন। আরশাদের নিয়োগ চূড়ান্ত হলে বিসিবির বিদেশি কোচিং স্টাফে আধিপত্য থাকবে পাকিস্তানের। 

গত ১৫ বছরে মূলত অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ বেশি ছিলেন বিসিবিতে। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ নেই। জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে এইচপির পেস বোলিং কোচ কলি মুর ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান কোচ শ্রীলঙ্কান নাভিদ নাওয়াজ। জাতীয় দলের বাকি কোচিং স্টাফের নিয়োগ চূড়ান্ত না হওয়ার পরই জানা যাবে কোন দেশের প্রভাব বেশি।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল র ক জ করছ ন এইচপ ত ক জ কর আরশ দ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি

প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেনকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ হুমকি দেন তিনি।

এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আনোয়ার হোসেন।

ফেসবুক পোস্টে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের দুটি ছবি লাল দাগ দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেন মোত্তাসিন। ক্যাপশনে তিনি আনোয়ার হোসেনের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘....সত্য লিখুন, না হলে আপনিও ছাড় পাবেন না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’

মোত্তাসিন বিশ্বাসের পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে আনোয়ার হোসেনকে একাধিক আইডি থেকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ বুধবার বেলা ৩টা ১৬ মিনিটে মোত্তাসিনের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি তাঁর ওয়ালে আবার দেখা যায়। এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ’।

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোত্তাসিন বিশ্বাস আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক পোস্টে হলুদ কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। এটি গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ নিয়ে প্রথম আলোয় ‘পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ খবরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েই এমন পোস্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন মোত্তাসিন।

তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলেছিলেন, পরে মুছে দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের করা কোন সংবাদটির বিষয়ে পোস্ট করেছেন, জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাকে বাধা দেওয়ার সংবাদটির কথা জানান।

মোত্তাসিন বিশ্বাস আরও বলেন, প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন চব্বিশের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু সংবাদটি এভাবে কেন লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়ে গেছেন। সে জন্যই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন।

আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেছেন, স্ট্যাটাসে তাঁর দুটি ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পোস্টে মোত্তাসিনের অনুসারীসহ আরও অনেকে খারাপ মন্তব্য করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জিডি করার কথা জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এটি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, এই পোস্ট দেওয়ার পর রাতে তাঁরা এটি নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোস্টটি ডিলিট করা হবে।

আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫সাংবাদিক সমাজের নিন্দা-প্রতিবাদ

আনোয়ার হোসেনকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জরুরি সভা করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সভায়। অবহিত করার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাবতীয় সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিজেএ) সভাপতি রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিটিজেএর নেতা ও সদস্যরা।

সভার পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশে একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে আপত্তিজনক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব অধিকারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার। একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে ফেসবুকে এমন পোস্ট সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপ, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করেছে।’ অবিলম্বে মোত্তাসিন বিশ্বাস তাঁর দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ না করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
  • প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি