পড়ে থাকা একটি প্যান্টের বেল্ট তুলতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের শিকার হলো নাঈম হাসান নামে একজন এতিমখানার শিশু। 

শুক্রবার (২৮ মার্চ) চুরির অপবাদ দিয়ে শিশুটিকে খুঁটিতে বেঁধে বেদম মারধর করা হয়। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। নূরুল হক নামে শহরের রাজনগরের ইসলামিয়া এতিমখানার পরিচালনা কমিটির এক সদস্যকে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

শিশুটি ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার সকালে শহরের রাজনগর এলাকার ইসলামিয়া এতিমখানার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈম হাসান ও কয়েকজন সহপাঠী মিলে পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে ঘুড়ি উড়াতে যায়। সেখানে প্যান্টের একটি বেল্ট পড়ে থাকতে দেখে নাঈম সেটি তুলতে যায়। এসময় এক নির্মাণশ্রমিক তাকে আটক করে চুরির অভিযোগ তোলে। এরপর ভবনের মালিক ও এতিমখানার পরিচালনা কমিটির সদস্য নূরুল হক ও জসিম উদ্দিন শিশুটিকে খুঁটিতে বেঁধে প্রায় তিন ঘণ্টা মারধর করে। দুপুরে শিশুটিকে এতিমখানার জিম্মায় দেওয়া হয়। শিশুটির সহপাঠীরা তাকে কাঁদতে দেখে ঘটনা জানতে পারে ও বিষয়টি স্থানীয়দের জানায়। 

বিকেলে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে নূরুল হককে ঘেরাও করে। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ এসে অভিযুক্ত নূরুল হককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির জানান, অভিযুক্ত নূরুল হককে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিশুটির প্রতি এমন অমানবিক আচরণের জন্য অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

তিনি আরও জানান, রাত ১০টায় এতিমখানার কমিটি জরুরি সভায় বসে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তার অভিযুক্তের সদস্য পদ সাময়িক স্থগিত করা হয় বলে জানিয়েছেন কমিটির এক সদস্য। এ ব্যাপারে শিশুটির মা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় নুরুল হক ও জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে আরো দুইজনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আসামি জসিম উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

হাওরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা

হাওরের বুক চিরে চলে গেছে পিচঢালা আঁকাবাঁকা রাস্তা। দুই ধারে থৈ থৈ স্বচ্ছ পানি। তাতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সবুজ গোল পাতার ওপর নয়নাভিরাম সাদা শাপলা। 

প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে। তবে, হাওরে এখনো বর্ষার আমেজ। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে এখনো পানিতে টইটুম্বুর হাওর। পথে যেতে যেতে দেখা মেলে শিল্পীর আঁকা ছবির মতো দৃশ্য। 

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশে কাউয়াদিঘি হাওরে পানির কমতি নেই। পানির ওপরে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা। স্বচ্ছ জলে ভাসছে হংস-মিথুন। এ যেন অপরূপ ছবির ক্যানভাস, রূপসী বাংলার শাশ্বত চিত্র।  

এমন দৃশ্য দেখে হয়ত কেউ মনের অজান্তেই গুনগুনিয়ে  গাইছেন, ‘যখন তোর ঐ গায়ের ধারে/ঘুঘু ডাকা নিঝুম কোনো দুপুরে/ হংস-মিথুন ভেসে বেড়ায়/শাপলা ফোটা টলটলে ঐ পুকুরে’।  

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাউয়াদিঘি হাওরের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে, সাদা শাপলা সবার মন কাড়ে। দূর-দূরান্ত মানুষ ছুটে আসেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

সম্প্রতি হাওরপাড়ে দেখা হয় বেড়াতে আসা ফাহিম ও সুমন নামের দুই কিশোরের সঙ্গে। তারা বলে, অবসর পেলে একটু প্রশান্তির জন্য কাউয়াদিঘি হাওরপাড়ে আসি। প্রকৃতির রূপ দেখে মন ভরে যায়। 

হাওর পাড়ের বাসিন্দা বেতাহুঞ্জা মৌজার গেদন মিয়া বলেন, এবার দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় শরৎকালেও বর্ষার ভাব আছে। হাওরের পেট ভরে আছে বর্ষার জলে। এখনো সাদা শাপলা (স্থানীয় নাম ভেট বা হালুক ) ভালোভাবে ফোটেনি। ভালোভাবে ফুটলে আরো সুন্দর লাগবে। 

হাওরের ভুরভুরি বিলের ধারে গেলে দেখা হয় প্রকৃতিপ্রেমী আবু বকরের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাদা শাপলা হাওরের শোভা বাড়িয়েছে। স্বচ্ছ জলের মাঝে হংস-মিথুন ভেসে বেড়াচ্ছে। এ যেন কোনো শিল্পীর রঙ-তুলির আঁচড়। সাদা শাপলার জৌলুস প্রকৃতিকে আরো মনোহর করে তোলে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অভিদপ্তরের রাজনগর উপজেলা কার্যালয়ের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লা আল আমিন বলেন, শাপলা সপুষ্পক পরিবারের জলজ উদ্ভিদ। সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল আমাদের দেশের হাওর, বিল ও দিঘিতে বেশি ফোটে। 

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাওরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা