পূর্বসূরী আলেম ও মনীষীরা আল্লাহর ইবাদত, আনুগত্য, অনুতাপ ও ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসকে বিদায় জানাতেন। তারা রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করতেন। সেই হিসেবে ২৯ রোজার রাতেও তারা পরিপূর্ণ ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও পুণ্যের আশায় কদরের রাতে রাত্রি জাগরণ করবে তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০১)

ইমাম শাবি (রহ.

) রমজানের শেষে এত বেশি ইবাদত করতেন যে, তার ব্যাপারে বলা হতো, ইমাম শাবির রাত হলো দিনের মতোই। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলতেন, আমি এটা পছন্দ করি যে, রমজানের শেষভাগের দিনে আমি সে পরিমাণ ইবাদত করব, ঠিক যে পরিমাণ রাতে করে থাকি। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ২৮৮)

আমাদের পূর্বসূরীরা রমজানে শেষভাগে প্রতিটি রাতে এমনভাবে ইবাদত করতেন যেন, তারা নিশ্চিতভাবে জানতেন এটাই কদরের রাত। এজন্য তারা প্রত্যেক রাতে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অর্জনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। ইমাম নাখয়ি (রহ.) রমজানের শেষ দশকের প্রত্যেক রাতে গোসল করতেন। আর কোনো আকাবির কেবল শেষ রাতেই গোসল করতেন যেই রাতের ব্যাপারে ধারণা হতো আজই শবে কদর। তারা সেদিন সুগন্ধিও ব্যবহার করতেন। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ২৮৯)

আরো পড়ুন:

সদকাতুল ফিতরের বিধান ও কল্যাণ

রমজানে কী পেলাম, কী হারালাম

রমজানের শেষভাগে এসে মনীষীরা তাদের দানের হাত প্রসারিত করতেন। তারা উদারভাবে দান করতেন। বিশেষত যদি তাদের ধারণা হতো আজই কদরের রাত। সেটা ২৯ রমজানের রাত হলেও। সাবেত আল বানানি (রহ.) বলেন, তামিমে দারি (রহ.) একটি মূল্যবান পোশাক ছিল। তিনি তা এক হাজার দিরহাম দিয়ে ক্রয় করেছিলেন। রমজানের শেষ রাতে (২৯ রোজার দিন) তার মনে হলো আজ কদরের রাত হতে পারে, ফলে তিনি সেই দামী পোশাকটি দান করে দিলেন। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ২৯০)

সুহাইব বিন আবু মুহাম্মদ (রহ.) ও তার স্ত্রী উভয়ে অত্যন্ত উঁচু মাপের বুজুর্গ ও ইবাদতকারী ছিলেন। রমজানের শেষ দিকের রাতগুলোতে তার স্ত্রী তাকে বলতেন, ‘রমজানের বহু রাত গত হয়েছে। আমাদের সামনে এখনো কিছু রাত অবশিষ্ট আছে। এ সময় পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে। কেননা আমাদের পরকালের পাথেয় খুবই সামান্য। পূর্বসূরী মনীষীরা আমাদের চেয়ে অনেক অগ্রগামী ছিলেন। আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ২৯৫)

আক্ষেপ! আজ আমাদের জীবনসঙ্গী না আমাদেরকে এভাবে ইবাদতের প্রতি উত্সাহিত করে, না আমরা আমাদের স্ত্রী-সন্তানের মন-মস্তিস্ককে এভাবে গড়ে তুলতে পেরেছি। ফলে তারা আমাদের পরকালের পাথেয় অর্জনের চেয়ে পার্থিব জীবনের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করতে বেশি অনুপ্রাণিত করে। আমরা উভয়েই মূলত পরকালের ওপর ইহকালকে প্রাধান দিয়ে চলি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক দান দান করুন। আমিন।

পূর্বসূরী মনীষীরা মূলত পবিত্র রমজান মাসকে ইবাদত, তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ ও দানশীলতার মাধ্যমে বিদায় দিতেন। তারা আল্লাহর দরবারে যেমন তাদের ইবাদতগুলো কবুলের আশা রাখতেন, তেমনি তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ও করতেন। ফলে আল্লাহর কাছে ইবাদত কবুলের দোয়া করতেন এবং রমজান মাসে যেসব ভুল ত্রুটি হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। আর হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, ঈমান হলো আশা ও ভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থানের নাম। 

যদিও তারা রমজানে সর্বাত্মকভাবে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকতেন, তবুও রমজানের শেষভাগে তারা কখনো আত্মতৃপ্তিতে ভুগতেন না, বরং রমজানের বিদায়ের মুহূর্ত যত ঘনিয়ে আসত তাদের ভেতর আক্ষেপ তত প্রবল হতো। তারা নিজের ওপর হতাশা প্রকাশ করতেন, রমজানের অতীত দিনগুলোর জন্য আক্ষেপ করতেন যেন তারা নিতান্তই অবহেলায় রমজান অতিবাহিত করেছে এবং সামনে তাদের রমজান পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে তারা শেষ মুহূর্তটিও কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। আবু কিলাবা (রহ.) রমজানের শেষ দিন নিজের সবচেয়ে সুন্দরী দাসীকে মুক্ত করে দিয়েছেন এই আশায় যে, আল্লাহ যেন তার আমলগুলো কবুল করেন এবং রমজানের যাবতীয় ভুল-ত্রুটি মার্জনা করেন। সর্বোপরি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ৩০০)

রমজানের বিদায়লগ্নে তাদের এই অস্থিরতার কারণ ছিল- তারা আল্লাহ ও তার রাসুল রমজানের ব্যাপারে যেসব ঘোষণা দিয়েছিলেন সেগুলোকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন। যেমন মহানবি (সা.) বলেছেন, “ওই ব্যক্তির নাক ধুলোধূসরিত হোক যে রমজান পেল এবং তার গুনাহ মাফ করার আগেই তা বিদায় নিল।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪৫)

অন্য হাদিসে তিনি বলেছেন, “তোমাদের কাছে বরকতময় মাস রমজান আগমন করল। আল্লাহ তোমাদের ওপর এই মাসের রোজা ফরজ করেছেন, এই মাসে জান্নাতের দরজা খোলা হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। এ মাসে এমন একটি রাত আছে যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে সত্যিই বঞ্চিত হলো।” (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২১০৮)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে যথাযথভাবে রমজান মাসকে বিদায় জানানোর তাওফিক দিন। আমিন। 

লেখক : মুহাদ্দিস, সাঈদিয়া উম্মেহানী মহিলা মাদরাসা, ভাটারা, ঢাকা।
 

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স য় ম স ধন রমজ ন ল ত য় ফ ল ম আর ফ রমজ ন র শ ষ দ রমজ ন ম স রমজ ন র ব কদর র র ত আম দ র স পরক ল র করত ন য দ ন কর মন ষ র আল ল হ র ওপর ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

ডলার ও বিদেশিদের ব্যাংক হিসাবে আমানত এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ

হঠাৎ করে দেশে অবস্থানকারী বিদেশিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার বাংলাদেশিরাও দেশের ব্যাংকগুলোতে আগের চেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা জমা রাখছেন। এতে ব্যাংকগুলোতে বিদেশি মুদ্রার যে হিসাব আছে, সেটিও বাড়ছে অন্যান্য আমানত হিসাবের চেয়ে বেশি। গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রায় রক্ষিত আমানত বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যদিও বিদেশি মুদ্রার বাইরে দেশীয় মুদ্রার আমানত হিসাবে এক বছরে আমানত বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত ব্যাংকগুলোর আর্থিক তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মূলত ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এসব হিসাবে অর্থ জমা বেশি বেড়েছে। এর ফলে ঘরে রাখা ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। এটা শুরু হয়েছে আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত বা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাব ও বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবের ওপর সুদসহ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কারণে।

আমানত কতটা বাড়ল

দেশের ব্যাংকগুলোতে নানা ধরনের আমানত পণ্য রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দেশি ও বিদেশিদের জন্য পৃথক আমানত পণ্য। বিদেশি মুদ্রার জন্য রয়েছে পৃথক আমানত পণ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবস্থান করা বিদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিদেশিরা সাধারণত বিদেশি মুদ্রাকে টাকায় রূপান্তর করে এই ধরনের হিসাব পরিচালনা করেন, ব্যাংকের ভাষায় এসব হিসাবকে কনভার্টেবল টাকা অ্যাকাউন্ট অব ফরেনার্স বা বিদেশিদের জন্য টাকায় রূপান্তরযোগ্য হিসাব বলা হয়। ২০২৪ সালের মার্চে এই ধরনের হিসাবে জমা ছিল ১ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা, গত মার্চ শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।

একইভাবে বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবেও (এফসিএ) জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের মার্চে এই ধরনের হিসাবে জমা ছিল ৬ হাজার ৫৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। গত ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ। আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোই সাধারণ এফসিএ হিসাব খুলে থাকে। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এ ধরনের হিসাব খুলতে পারেন।

এ ছাড়া শুধু প্রবাসীদের জন্য আলাদা আমানত হিসাবও রয়েছে, তাতে স্থিতি খুব বেশি বাড়েনি। গত বছরের মার্চে প্রবাসীদের আমানত হিসাবে স্থিতির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবে (আরএফসিডি) আমানতও বেড়েছে। গত বছরের মার্চে এই ধরনের হিসাবে আমানত ছিল ২৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা।

তবে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে আমানত সেভাবে বাড়েনি। ২০২৪ সালের মার্চে পুরো খাতে আমানত ছিল ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয় ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছে ১ শতাংশের কিছু বেশি।

কেন বাড়ছে ডলার ও বিদেশিদের জমা অর্থ

দেশে ডলার–সংকট দেখা দেওয়ায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মানুষের ঘরে থাকা ডলার ব্যাংকে ফেরাতে আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত বা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাবের ওপর সুদসহ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই দি সিটিসহ কিছু ব্যাংক বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে এই ধরনের হিসাব খুলতে শুরু করে। বর্তমানে নগদ ডলারের বড় অংশ মজুত আছে ইস্টার্ন, দি সিটি, ব্র্যাক, ডাচ্-বাংলা, প্রাইম, পূবালী, বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসি এবং দেশীয় মালিকানাধীন ইসলামীসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকে। মার্কিন ডলারের পাশাপাশি পাউন্ড, ইউরো, অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডিয়ান ডলার, সিঙ্গাপুরি ডলারেও আরএফসিডি হিসাব খোলা যায়।

সুদ বৃদ্ধিসহ ব্যাংকগুলোর নানা উদ্যোগের ফলে ঘরে থাকা ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। কারণ, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের এসব হিসাবে জমা বিদেশি মুদ্রার ওপর সুদ দিচ্ছে। পাশাপাশি এই ধরনের হিসাবের ডলার কোনো বাছবিচার ছাড়াই দেশে ও বিদেশে গিয়ে খরচ করা যাচ্ছে। প্রতিবার বিদেশ ভ্রমণের সময় এই হিসাব থেকে নগদ ৫ হাজার মার্কিন ডলার নেওয়া যায়। হিসাবধারী এবং তার ওপর নির্ভরশীলদেরও প্রয়োজনে বিদেশে কয়েকটি খাতে অর্থ খরচের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ, সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে খরচ। এসব খাতে খরচের কোনো সীমা রাখেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে শুধু হিসাবধারীরা নিজ প্রয়োজনে বিদেশে অর্থ নেওয়া ও খরচের সুবিধা পেতেন।

এদিকে ব্যবহারযোগ্য সব ধরনের বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে প্রবাসীদের জন্য। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের নামে খোলা বৈদেশিক হিসাবের সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এত দিন শুধু অনুমোদিত চারটি বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের হিসাব খোলার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো ডলার, পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েন। কিন্তু এখন অনুমোদিত মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারছেন প্রবাসীরা।

এ ছাড়া যেসব বিদেশি বাংলাদেশে কর্মরত ও বসবাস করছেন, তাঁদের যে টাকার হিসাব রয়েছে, তাতেও আমানত বেড়েছে। এ ধরনের হিসাবে গত সেপ্টেম্বরে আমানত বেশ কমে যায়, তবে ডিসেম্বরে আবার তা বেড়ে যায়। আর গত মার্চ শেষে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগস্টে বড় পরিবর্তনের পর দেশের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আবার অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপে বিদেশিরা সহায়তা দিচ্ছেন। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ছে ও এই ধরনের হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বাড়ছে।

এ বিষয়ে বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক হিসাবে ডলার জমা রাখলে এখন সুদ পাওয়া যায়, এ ছাড়া রয়েছে নানা সুবিধা। যাঁরা নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করেন, তাঁরাও এখন নিজ নিজ হিসাবে ডলার জমা রাখছেন। এতে মুদ্রার মান কমলেও কোনো ক্ষতি হয় না। এ ছাড়া চীনের বিনিয়োগকারীরা দেশে আসছেন। এই কারণে বিদেশিদের হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বাড়তে পারে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো খবর। কারণ, অন্য আমানতে যখন এত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না, তখন ডলার হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ