চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী, দুজন শিশু ও পাঁচজন পুরুষ। এদের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় মিলিছে।     

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শুভ রঞ্জন চাকমা। তিনি বলেন, ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে। তাদের নাম সাধনা মণ্ডল, দিলীপ বিশ্বাস, আশিস মণ্ডল ও দূর্জয় মণ্ডল। তারা সবাই কুষ্টিয়া সদর থানার বেয়ালিয়া এলাকার। 

শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, নিহতরা সবাই আত্মীয়স্বজন এবং ঈদের ছুটিতে কুষ্টিয়া থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রী মতিন মিয়া বলেন, চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী রিলাক্স পরিবহনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। বেশ কয়েকবার চালক বাসটি থামানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যেই বিপরীত দিক থেকে আসা কক্সবাজারমুখী মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। 

লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আহত অবস্থায় ৬ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে আরও ৩ জন মারা গেছেন। নিহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে।

লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, রাস্তার মোড় ও লবনবাহী গাড়ির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবার পরিচয় জানার পর আইনি প্রক্রিয়ায় মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। মরদেহগুলো হাইওয়ে থানা হেফাজতে আছে। 

একই স্থানে ঈদের দিন সোমবার দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। এরপর দিন ১ এপ্রিল ওই স্থানেই দুই মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৮ জন আহত হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত আহত দ র ঘটন ৪ জন র ন র পর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ