যুবককে হত্যার পর হাসপাতালে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা
Published: 8th, April 2025 GMT
বগুড়ার শেরপুরে কাবিল হোসেন (৪০) নামে এক যুবককে হত্যার পর লাশ হাসপাতালে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার। তবে, পুলিশ বলছে, পরকীয়া প্রেমের জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাবিলের লাশ রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
আরো পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ‘মারধরে’ যুবকের মৃত্যু, আটক ২
আবু সাঈদ হত্যার সঠিক বিচারে সচেষ্ট হতে হবে: প্রধান বিচারপতি
নিহত কাবিল হোসেন উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে।
নিহত কাবিল হোসেনের স্ত্রী শাপলা খাতুন জানান, মেলায় যাওয়ার কথা বলে গতকাল সোমবার বিকেলে বাড়ি থেকে হন কাবিল। রাত ১০টা বেজে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেননি। এ কারণে তাকে মোবাইলে কল করেন তিনি। এরপর ঘুমিয়ে যান। আজ সকাল ৮টার দিকে খবর পান হাসপাতালে কাবিলের লাশ রাখা আছে। রাত ৩টার দিকে ফুফু শাশুড়ির ছেলে সজিব কাবিলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। মারা যাওয়ায় কাবিলের মরদেহ রেখে সজিব পালিয়ে যান।
শাপলা খাতুন বলেন, “প্রায় সাত মাস আগে সজীবের ভাবীর মোবাইলে ভুলক্রমে একটি ‘নাইস’ লেখা এসএমএস যায় আমার স্বামীর মোবাইল থেকে। আমার স্বামী ভুলও স্বীকার করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামী কাবিলকে হত্যা করা হয়েছে।”
শেরপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “নিহতের শরীরের কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পিটিয়ে হত্যা বলা যায়। কাবিলকে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। যারা নিয়ে এসেছিলেন তাদের যখন চিকিৎসক জানান কাবিল মারা গেছেন তারা লাশ রেখেই পালিয়ে যান। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি। লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “নিহতের পরিবার জানিয়েছে, ওই গ্রামের এক নারীর সঙ্গে কাবিলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ঘটনার জেরেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে। তাদের দেওয়া তথ্য আমলে নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। নিহতের পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।”
ঢাকা/এনাম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য অভ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?