পক্ষাঘাতগ্রস্তদের কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে নতুন ব্রেন-টু-ভয়েস প্রযুক্তি
Published: 8th, April 2025 GMT
পক্ষাঘাতে কথা বলার সক্ষমতা হারানো ব্যক্তিদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে ও সান ফ্রান্সিসকোর গবেষকেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যা মস্তিষ্কের সংকেতকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভাষায় রূপান্তর করতে পারে। এর ফলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারবেন।
ন্যাচার নিউরোসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, নতুন এই প্রযুক্তি বক্তৃতাসহায়ক নিউরোপ্রস্থেটিকসের জগতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। আগে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তিতে একজন ব্যবহারকারী যা বলতে চান, তা শব্দে রূপান্তরিত হতে গড়ে আট সেকেন্ড পর্যন্ত সময় লাগত। নতুন এ উদ্ভাবন সেই সময় কমিয়ে এনেছে। এর ফলে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।
গবেষকেরা জানান, এই প্রযুক্তির কার্যপ্রণালি অনেকটাই স্মার্ট ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যালেক্সা বা সিরির মতো। এটি দ্রুত ভাষা বিশ্লেষণ করে স্বাভাবিক ভয়েস স্ট্রিমিং নিশ্চিত করতে পারে। এর ফলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিরা কথোপকথনের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রেখে যোগাযোগ করতে পারবেন। এ বিষয়ে গবেষক দলের প্রধান চেওল জুন চো বলেন, নতুন এই নিউরোপ্রস্থেটিকস প্রযুক্তি মস্তিষ্কের মোটর করটেক্স থেকে নিউরাল সংকেত সংগ্রহ করে, যা মানুষের বক্তৃতা নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সেই সংকেতগুলোকে ভাষায় রূপান্তর করা হয়।
নতুন ব্রেন-টু-ভয়েস প্রযুক্তি এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ৪৭ বছর বয়সী অ্যান নামের এক নারীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি ১৮ বছর ধরে বাক্শক্তিহীন ছিলেন। গবেষকেরা তাঁর মস্তিষ্কে ইলেকট্রোড বসান, যা তাঁর কথা বলার চেষ্টার সময় নিউরাল সংকেত সংগ্রহ করে। এরপর এআই সিস্টেম সেই সংকেতকে শব্দে রূপান্তর করে। আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় প্রযুক্তিটি অ্যানের দুর্ঘটনার আগের কণ্ঠস্বরও পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছে। গবেষকদের ধারণা, নতুন এই উদ্ভাবন স্ট্রোক বা অন্যান্য স্নায়ুরোগের কারণে বাক্শক্তি হারানো ব্যক্তিদের জন্যও বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।