বছরজুড়ে দেশের মাঠে বাজে পারফরম্যান্স
Published: 8th, April 2025 GMT
, জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেরা দল
২০২৩ বিশ্বকাপের পরপর দেশের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটি সিরিজ খেলে লাল সবুজের দল। জয় তো দূরে থাক ড্র'ও করতে পারেনি টাইগাররা।
এবার বাংলাদেশ সফরে আসছে জিম্বাবুয়ে। সিলেট ও চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে দলটি। প্রথম টেস্টের জন্য মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলে শক্তিশালী দল গঠন করেছে বিসিবি। ইনজুরির কারণে দলে নেই তাসকিন আহমেদ আর পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) জন্য ছুটিতে থাকায় লিটন দাসকে রাখা হয়নি।
সবমিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শক্তিশালী দল গঠনের কারণ ব্যাখা করেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। দেশের মাঠে গত এক বছরের বাজে পারফরম্যান্স থেকে বেরিয়ে আসতেই মূলত এমন দল গড়া।
লিপু বলেন, “গত এক বছরে আমাদের দেশের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা যথেষ্ট চিন্তিত। সেকারণে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে আমাদের সম্ভাব্য সেরা দলটি নিয়ে আমরা খেলার চেষ্টা করছি।”
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে ১৮টি টেস্ট খেলেছে। তাতে শান্তরা জয় পেয়েছেন ৮টিতে আর হেরেছেন ৭টিতে। ৩টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। সবশেষ ২০২০ সালে বাংলাদেশে এসেছিল জিম্বাবুয়ে। সেবার ধবলধোলাই হয় সফরকারীরা। এরপর ২০২১ সালে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েতে খেলতে যায়। সেবারও জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ।
তিনজন ওপেনার, তিন জন স্পিনার এবং ৪ জন পেসার নিয়ে দল সাজিয়েছে বাংলাদেশ। কনকাশনের বিষয়টি মাথায় রেখে এমন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক।
“কনকাশন আসার পর থেকে লাইক টু লাইক রিপ্লেসমেন্টের (একই ধরণের ক্রিকেটার) যে কথাটা চলে আসছে, সে কারণে একজন বাড়তি ওপেনার, মিডল অর্ডারে একটা রাখা, স্পিনে একজন রাখা, পেস বোলিংয়ে যদি তিনজন সিমার থাকে সেখানেও একজন রাখে। সেকারণে আমাদের স্কোয়াডটা আমরা ১৫ জনের করেছি।”
লিটন দাস না থাকায় ছয় কিংবা সাতে দেখা যেতে পারে জাকের আলী অনিক কিংবা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। দুজনেই টেস্টে নবাগত। কে খেলবেন এটা বাছাইয়ের জন্য ম্যানেজম্যান্টকে মধুর সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করেন আশরাফ।
“৬ বা ৭ এ লিটন দাস না থাকাতে এখানে একটা মধুর সমস্যা আছে। এটা বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। পাশাপাশি আমাদের স্পিনে অনেক অপশন আছে, মেহেদী মিরাজ অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন, তাইজুল আছেন, নাঈম আছেন, সো এই অপশনটাও রাখা হয়েছে। চারজন পেসার আছেন, সেখানেও অপশন থাকবে।”
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।
চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।
আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।
নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’