পরকীয়ার অভিযোগে তরুণ-তরুণীকে ৬ ঘণ্টা গাছে বেঁধে রাখলেন মাতবরেরা
Published: 9th, April 2025 GMT
রাজশাহীর দুর্গাপুরে পরকীয়ার অভিযোগ এনে তরুণ–তরুণীকে আটক করে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এলাকাবাসী। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাঁরা আমগাছের সঙ্গেই বাঁধা ছিলেন। পাহারা দিচ্ছিলেন গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
তবে আটক তরুণ–তরুণী পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁদের হাতের বন্ধন খুলে দিয়ে গাছের নিচে একটি চটে বসিয়ে রাখা হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে পুলিশ গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়। উপজেলার একটি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
আতিকুর রহমান নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা লোকজন ডেকে একটি বাড়ি থেকে ওই তরুণ–তরুণীকে আটক করেন। তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে দাবি ওই ব্যক্তির। এ সময় আটক তরুণ জানান, স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে জোর করে আটক করেন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে তরুণী জানান, ওই তরুণের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি তাঁর (তরুণ) বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
ঘটনাস্থলে তরুণ–তরুণীকে পাহারা দিয়েছেন গ্রাম পুলিশ সাইফুল ইসলাম। চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাঁদের পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন বলে তিনি জানান।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবু সাইদ নামের এক মাতবর বলেন, ‘আমি পার্শ্ববর্তী একটি বাজারে ব্যবসা করি। সেখানে দোকান আছে আমার। আমি এখনো দোকান বন্ধ রেখে ঘটনাস্থলে যাইতে পারিনি। এলাকাবাসী আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছেন। আমি দোকান বন্ধ করে যাইতে পারছি না। তাঁদের বলে দিয়েছি, তোমরা আইনের হাতে তুলে দাও। তাঁরা আমার কথা শুনছেন না। আমার অপেক্ষায় আছেন, বিষয়টা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। আমি তাঁদের না করে দিয়েছি। এরপরও কথা না শোনায় এখন সন্ধ্যা ছয়টা বাজে আমি দোকান বন্ধ রেখে সেখানে যাচ্ছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ওখানে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। কারণ, ধর্ষণের ঘটনার বিচার বা ফয়সালা করার অধিকার আমার নেই। আমি তাঁদের থানা–পুলিশে খবর দিতে বলেছি।’
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরল হুদা বলেন, ‘বিষয়টা শুনেছি। এলাকাবাসী থেকে জানানো হয়েছে, ওই তরুণ–তরুণী বিয়ে করবেন। কোনো অভিযোগ পাইনি। যেহেতু তাঁরা বিয়ে করতে চান, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।’
দুপুর থেকে আমগাছের সঙ্গে তাঁদের বেঁধে রাখা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে তাঁদের বেঁধে রাখা যাবে না। আমি দ্রুত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক ব স
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম মো. আরিফুল। শুক্রবার বেলা এগারোটার দিকে তিনি ভবন থেকে পড়ে যান বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিংতম বলেন, বেলা এগারোটার দিকে কয়েকজন ওই শ্রমিককে নিয়ে আসেন। অবস্থা গুরুতর দেখে তখনই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নির্মাণাধীন ভবনটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোমিনুল করিম শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু শ্রমিক ওই ভবনে থাকেন। দুপুরের দিকে তিনি জানতে পারেন একজন শ্রমিক ভবন থেকে পড়ে গেছেন। তাঁকে এনাম মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। সন্ধ্যাবেলায় তাঁকে জানানো হয় ওই শ্রমিক মারা গেছেন।
তবে এনাম মেডিকেলের ডিউটি ম্যানেজার সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর থেকে একজন রোগীকে আনা হয়েছিল। উনি ছাদ থেকে পড়ে গেছেন বলে জানানো হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।
শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আধা ঘণ্টা আগে খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এমন একটি ঘটনা আমাদের আগে জানানো হয়নি কেন, তা জিজ্ঞাসা করেছি। বিষয়টি প্রো-ভিসি (এডমিন) দেখছেন।’