রাজশাহীর দুর্গাপুরে পরকীয়ার অভিযোগ এনে তরুণ–তরুণীকে আটক করে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এলাকাবাসী। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাঁরা আমগাছের সঙ্গেই বাঁধা ছিলেন। পাহারা দিচ্ছিলেন গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

তবে আটক তরুণ–তরুণী পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁদের হাতের বন্ধন খুলে দিয়ে গাছের নিচে একটি চটে বসিয়ে রাখা হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে পুলিশ গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়। উপজেলার একটি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

আতিকুর রহমান নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা লোকজন ডেকে একটি বাড়ি থেকে ওই তরুণ–তরুণীকে আটক করেন। তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে দাবি ওই ব্যক্তির। এ সময় আটক তরুণ জানান, স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে জোর করে আটক করেন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে তরুণী জানান, ওই তরুণের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি তাঁর (তরুণ) বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

ঘটনাস্থলে তরুণ–তরুণীকে পাহারা দিয়েছেন গ্রাম পুলিশ সাইফুল ইসলাম। চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাঁদের পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন বলে তিনি জানান।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবু সাইদ নামের এক মাতবর বলেন, ‘আমি পার্শ্ববর্তী একটি বাজারে ব্যবসা করি। সেখানে দোকান আছে আমার। আমি এখনো দোকান বন্ধ রেখে ঘটনাস্থলে যাইতে পারিনি। এলাকাবাসী আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছেন। আমি দোকান বন্ধ করে যাইতে পারছি না। তাঁদের বলে দিয়েছি, তোমরা আইনের হাতে তুলে দাও। তাঁরা আমার কথা শুনছেন না। আমার অপেক্ষায় আছেন, বিষয়টা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। আমি তাঁদের না করে দিয়েছি। এরপরও কথা না শোনায় এখন সন্ধ্যা ছয়টা বাজে আমি দোকান বন্ধ রেখে সেখানে যাচ্ছি।’

ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ওখানে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। কারণ, ধর্ষণের ঘটনার বিচার বা ফয়সালা করার অধিকার আমার নেই। আমি তাঁদের থানা–পুলিশে খবর দিতে বলেছি।’

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরল হুদা বলেন, ‘বিষয়টা শুনেছি। এলাকাবাসী থেকে জানানো হয়েছে, ওই তরুণ–তরুণী বিয়ে করবেন। কোনো অভিযোগ পাইনি। যেহেতু তাঁরা বিয়ে করতে চান, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।’

দুপুর থেকে আমগাছের সঙ্গে তাঁদের বেঁধে রাখা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে তাঁদের বেঁধে রাখা যাবে না। আমি দ্রুত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক ব স

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ