গাইনিকোম্যাস্টিয়া: ছেলেদের বিব্রতকর সমস্যা
Published: 10th, April 2025 GMT
সাধারণভাবে আমরা ধরে নিই, পুরুষের বুক হবে সমতল কিংবা সামান্য উঁচু। কিন্তু কারও স্তন যদি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং অনেকটা নারীসুলভ হয়ে যায়, তখন তা অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় আমরা একে বলি গাইনিকোম্যাস্টিয়া।
নবজাতক অবস্থায় বাচ্চা ছেলেদের এ রকম থাকতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের স্তনে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখা যায়, যেটি সাধারণত দুই-তিন বছরের মধ্যেই কমে যায়। এ ছাড়া প্রৌঢ়ত্বের পরে বয়স্ক পুরুষদের মধ্যেও এ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এই বৃদ্ধিকে কখন সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়?
বয়ঃসন্ধিকালে এ বৃদ্ধি হলেও তা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কথা। যদি ১৮ বা ২০ বছর বয়সেও তা স্বাভাবিক না হয়, তখন একে সমস্যা হিসেবে ভাবা হয়। যদি পোশাকের বাইরে থেকেও এটি বোঝা যায় এবং তা নিয়ে সেই তরুণ বা যুবক সামাজিকভাবে বিব্রত হন, তখন এটির চিকিৎসা করার প্রয়োজন হয়।
এ সমস্যা কেন হয়?
অনেক সময় হরমোনজনিত কিছু সুনির্দিষ্ট রোগের কারণে এ অসুবিধা হতে পারে। শরীরে কিছু দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে কিংবা অনেক দিন ধরে কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করলে এ রকম হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা এর সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাই না।
চিকিৎসা কী?
কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সেটি বন্ধ করার ব্যাপারে ভাবতে হবে। শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমাতে হবে। হরমোনজনিত নির্দিষ্ট কারণ থাকলে এন্ডোক্রাইনোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তবে এসব চিকিৎসায় সমাধান না হলে কিংবা সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া না গেলে শল্যচিকিৎসাই একমাত্র সমাধান।
স্তনের যে গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য এ পরিস্থিতি তৈরি হয়, অপারেশন করে সেই গ্ল্যান্ড অপসারণ করতে হয়।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক (প্লাস্টিক সার্জারি), জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং কনসালট্যান্ট, মনোয়ারা হসপিটাল, সিদ্ধেশ্বরী রোড, ঢাকা
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে চেয়ারম্যান শূন্য জবির সিএসই বিভাগ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে গত ১৪ দিন ধরে চেয়ারম্যান নেই।
গত ২ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিভাগটি কার্যত নেতৃত্বশূন্য। এ কারণে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
বিভাগে চেয়ারম্যান নিয়োগকে ঘিরে মূলত দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে দুই সিনিয়র অধ্যাপকের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে বিভাগে মাত্র দুইজন অধ্যাপক পালাক্রমে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যে অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন দুইবার এবং অপরজন তিনবার দায়িত্বে ছিলেন। বিভাগে নতুন করে আরো চারজন শিক্ষক অধ্যাপক পদে উন্নীত হয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাদের মধ্য থেকেই নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু পুরোনো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আবারো পদ দাবি করেন ড. নাসির উদ্দিন। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগের সব শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভা করে। শিক্ষকদের সম্মতিতে অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালাকে অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনদিন পরই গত ১৪ সেপ্টেম্বর ড. নাসির উদ্দিন ড. পরিমল বালার কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার পর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যান ডিন। শেষ পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে অব্যাহতি চান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন জানান, তিনি ইতোমধ্যে দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন। বিভাগে এখন নতুন তিনজন অধ্যাপক আছেন ঠিকই, কিন্তু জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে চেয়ারম্যান হওয়ার অধিকার তারই রয়েছে। তাই তাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান পদ ডিনকে দেওয়ায় তিনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
চেয়ারম্যানবিহীন অবস্থায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সিএসই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পলাশ বলেন, “আজ ১৪ দিন হয়ে গেলেও বিভাগে চেয়ারম্যান নেই। এতে আমরা একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। অন্য বিভাগ থেকে কেনো চেয়ারম্যান দেওয়া হবে? আমাদের ছয়জন অধ্যাপকের মধ্য থেকেই নিয়োগ দিতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, কোনো বিভাগে যদি অধ্যাপক না বাড়ে তবে বিদ্যমান অধ্যাপকরা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু নতুন কেউ অধ্যাপক হলে তাকেই চেয়ারম্যান করার নজির রয়েছে। এমনকি বর্তমান উপাচার্যের বিভাগেও একইভাবে নতুন অধ্যাপককে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। তবুও সিএসই বিভাগে সেই নিয়ম কার্যকর না হওয়ায় সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “চেয়ারম্যান নিয়োগে স্থায়ী সমাধানের জন্য আইন উপদেষ্টাদের কাছে মতামত চেয়েছি। এজন্যই অস্থায়ী সমাধান হিসেবে ডিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিশ পাঠানোয় পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেছে, যা আমাদের জন্য বিব্রতকর।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী