ওয়ালটন নিয়ে এলো ফোরজি সিম সাপোর্টেড রিচার্জেবল রাউটার
Published: 13th, April 2025 GMT
প্রযুক্তিপণ্যের জগতে একের পর এক চমক নিয়ে আসছে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বাংলাদেশি শীর্ষ এই প্রযুক্তিপণ্যের প্রতিষ্ঠান এবার নিয়ে এসেছে রিচার্জেবল ব্যাটারিসমৃদ্ধ ফোরজি সিম সাপোর্টেড রাউটার।
স্মার্ট ডিজাইন, উচ্চগতির ইন্টারনেট এবং সহজ ব্যবহারযোগ্যতার এক অনন্য সংমিশ্রণে তৈরি ওয়ালটনের নতুন এই রাউটার। বাসা কিংবা অফিসের নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি এবং স্ট্যাবল স্পিডের জন্য এটি হতে পারে পারফেক্ট সলিউশন।
নতুন আসা ওয়ালটনের তরঙ্গ ব্র্যান্ডের ডব্লিউআর৩৪জি মডেলের রাউটারটিতে রয়েছে শক্তিশালী ফোরজি এলটিই কানেক্টিভিটি, যা দিয়ে পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১৫০ এমবিপিএস ডাউনলোড এবং ৫০ এমবিপিএস আপলোড স্পিড। ২.
আরো পড়ুন:
ওয়ালটন প্লাজা থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পেলেন নাটোরের গৃহিণী
অনলাইনে ওয়ালটন প্লাজায় পণ্য কেনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়
রাউটারটিতে ব্যবহৃত হয়েছে এমইউ-এমআইএমও টেকনোলজি, যা একাধিক ডিভাইস একসাথে সংযুক্ত থাকলেও কানেক্টিভিটিকে রাখে স্ট্যাবল ও স্মুথ। রাউটারটিতে রয়েছে একটি মাইক্রো সিম স্লট, দুটি ল্যান পোর্ট এবং একটি ডিসি ইনপুট পোর্ট।
নতুন এই ডিভাইসটির অন্যতম বড় সুবিধা হলো এর বিল্ট-ইন ৪০০০ এমএএইচ রিচার্জেবল ব্যাটারি। ফলে বিদ্যুৎ না থাকলেও রাউটার চলতে থাকবে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এতে ঘরের ভিতরে, অফিস কিংবা দূরবর্তী এলাকাতেও সহজেই স্থায়ী ইন্টারনেট সংযোগ পাবেন গ্রাহক। এর শক্তিশালী এক্সটার্নাল অ্যান্টেনা দুর্বল নেটওয়ার্কেও ভালো সিগন্যাল রিসিভ করতে সহায়তা করে।
নিরাপত্তার দিক থেকেও এই রাউটারটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। এতে রয়েছে ডব্লিউপিএ২-পিএসকে এনক্রিপশন সাপোর্ট, যা হ্যাকিং বা অননুমোদিত অ্যাকসেস থেকে নেটওয়ার্ককে নিরাপদ রাখে।
ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, আমরা সবসময় ক্রেতাদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সর্বোচ্চ মানের পণ্য ও সেবা প্রদান করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাহকদের ঝামেলাহীন নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট প্রদানের লক্ষ্যে নতুন এই রিচার্জেবল ফোরজি সিম সাপোর্টেড রাউটার বাজারে ছাড়া হয়েছে। এটি বিদ্যুৎবিহীন এলাকা কিংবা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় গ্রাহকদের জরুরি ইন্টারনেটের প্রয়োজন মেটাবে। যেসব অঞ্চলে তারযুক্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান সম্ভব নয়, সেসব স্থানে মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করে গ্রাহকরা সহজেই নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিতে পারবেন।
ওয়ালটনের নতুন এই ফোরজি সিম সাপোর্টেড রাউটারটি এখন ১০% বিশেষ অফার মূল্যে মাত্র ৪,০৯৫ টাকায় ওয়ালটন প্লাজা থেকে ক্রয় করা যাচ্ছে। পাশাপাশি গ্রাহকরা ওয়ালটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://waltondigitech.com/products/network/wifi-router/walton-router-wr34g?tab=specs) ভিজিট করেও অনলাইনে সরাসরি অর্ডার করার সুবিধা উপভোগ করতে পারছেন।
ওয়ালটনের এই হাই পারফরম্যান্স রাউটারটির সাথে থাকছে ১ বছরের ওয়ারেন্টি যা গ্রাহকদের জন্য দিচ্ছে বাড়তি নির্ভরযোগ্যতা।
ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন রবচ ছ ন ন র চ র জ বল
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।
টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর।
গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।
দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত।
শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।
মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।
সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।