সাতক্ষীরায় নববর্ষ উদযাপনের প্রস্ততি, পুলিশের নানা উদ্যোগ
Published: 13th, April 2025 GMT
সাতক্ষীরায় প্রতিবছরের মতো এবারও নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে এই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নববর্ষ উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকেও ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা তথ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আগামীকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) পয়লা বৈশাখ সকাল ৭টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন কালেক্টরেট পার্কে জাতীয় সঙ্গীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশন করা হবে।
সকাল সোয়া ৭টায় পুরুষরা সাদা ফতুয়া, গ্রামীণ চেকের লুঙ্গি ও লাল গামছা এবং নারীরা লালশাড়ি ও বৈশাখি শাড়ি পরিহিত অবস্থায় আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শেষ হবে।
এরপর সুবিধাজনক সময়ে জেলা শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমিতে রচনা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরষ্কার বিতরণী। এছাড়া জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সুবিধাজনক সময়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ও যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে।
এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আগামীকাল সকালে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ১০ দিনব্যাপী লোকজ মেলার উদ্বোধন করা হবে। এরপর সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, কারাগারে, শিশু পরিবার ও এতিমখানায় উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালী খাবার পরিবেশন করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা তথ্য অফিসার জাহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইতোমধ্যে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রচনা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আগামীকাল বিজয়ীদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরষ্কার বিতরণ করা হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক জানান, বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো এলাকাজুড়ে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নিয়োজিত থাকবে।
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপলক ষ য প রস ত
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।