খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে তারা অপহরণের শিকার হন বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-প্রসীত) দায়ী করে অবিলম্বে অপহৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। 

তবে ইউপিডিএফ অপহরণের কথা অস্বীকার করেছে।  

অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী হলেন- চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। 

পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিবেক চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, অপহৃত চবির ৫ শিক্ষার্থীরা পাহাড়ের বিঝু উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। উৎসব শেষে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে ফেরার উদ্দেশে বাঘাইছড়ি থেকে দিঘীনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে যান। তবে ওই দিন চট্টগ্রামগামী বাসের টিকিট না পাওয়ায় তারা খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছু দূরে কুকিছড়া নামক এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন। আজ সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরস্থ কুকিছড়া থেকে টমটম গাড়িযোগে খাগড়াছড়ি সদরের স্টেশনে যাওয়ার পথে গিরিফুল এলাকায় একদল অস্ত্রধারী তাদের গাড়ি গতিরোধ করে। পরে অস্ত্রধারীরা টমটম গাড়িচালকসহ ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে। 

বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী ও চালককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে ইউপিডিএফের সংগঠক অংগ্য মারমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অপহরণের সঙ্গে তার সংগঠন জড়িত নয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ইউপিডিএফ সবসময় নিজেদের মধ্যে সংঘাত বন্ধের পক্ষে। তাই এ অপহরণের ঘটনায় ইউপিডিএফ জড়িত থাকা প্রশ্নই আসে না। ইউপিডিএফকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছে, এটি ষড়যন্ত্রের অংশ।    

খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণের বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইনে দেখছি। তবে অফিসিয়াল কাজে মহালছড়ি উপজেলায় আছি। তাই সদরে গেলে বিস্তার তথ্য নিয়ে জানাতে পারব।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণ র অপহ ত

এছাড়াও পড়ুন:

২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি

ভোলার ভ্যাপসা গরম, দুপুর গড়াতে না গড়াতেই সদর রোডজুড়ে তীব্র যানজট নাগরিক জীবনকে ব্যস্ত করে ফেলে। গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি খোঁজে। আর সেই স্বস্তি এনে দিতে পারে ভোলার বিখ্যাত বৈষা দধি।

দুপুরের আগেই সব দোকানের হাঁড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। মহিষের কাঁচা দুধে পাতানো এই দই ভোলার স্বাদ, ইতিহাস ও গর্বের এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ।

ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়। এই দইয়ের বিশেষত্ব হলো, মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে এটি পাতা হয়। বাজারে সচরাচর যে দই পাওয়া যায়, সেসব তৈরি হয় গরুর দুধ দিয়ে এবং দুধ জ্বালিয়ে গাঢ় করে। কিন্তু ভোলার বৈষা দধি হয় মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে।

জলবেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলার এক অমূল্য সম্পদ মহিষ। পূর্বে মেঘনা, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া, উত্তরে ইলিশা আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর—এই চার নদী ও সমুদ্রবেষ্টিত চরাঞ্চলে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার মহিষ। সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা দেড় লাখের কাছাকাছি, তবে স্থানীয় লোকজনের মতে তা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এই মহিষের দুধই বৈষা দধির প্রাণ।

প্রায় দুই শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় থাকে এই দই। এ ছাড়া অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম প্রধান উপাদান এটি। উৎসব-পার্বণ, বিয়েশাদি কিংবা যেকোনো সামাজিক আয়োজনে বৈষা দধি ছাড়া যেন ভোলার কোনো উৎসব পরিপূর্ণতা পায় না।

মুহাম্মদ শওকাত হোসেনের ‘ভোলা জেলার ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, দুই শ বছর আগে থেকে ভোলায় চর জাগতে শুরু করে। বসতি হয়, মহিষ পালন শুরু হয়। দুধ সংরক্ষণের উপায় ছিল না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দই বানাতেন। সেখান থেকেই বৈষা দধির যাত্রা শুরু, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো অঞ্চলে।

ভোলার মানুষের খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এই দই। এটি ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়, চিড়া-মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় মুখরোচক খাবার, আবার গরমের দিনে দই, পানি ও চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ঘোল—যা শরীরকে শীতল রাখে। শীতকালে হাঁসের মাংসের সঙ্গে টক দই ও খেজুরের গুড়—ভোলার ভোজনরসিকদের কাছে এক অনন্য স্বাদ। পান্তাভাতের সঙ্গে দই ও খেজুরের গুড় এই অঞ্চলের জনপ্রিয় একটি খাবার।

বর্তমানে প্রতি কেজি বৈষা দই বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। তবে ঈদে দাম বেড়ে যায়। ঈদের আগেই বিক্রেতারা দুধ জমাতে শুরু করেন এবং এ সময়ে প্রতিদিন ৮০০–৯০০ কেজি পর্যন্ত দই বিক্রি হয়।

ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত
  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি