কলা

কলায় থাকে প্রচুর শর্করা, যা তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করলেও বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে। কলায় ক্যালরিও থাকে বেশ। একটি মাঝারি আকারের কলা থেকে ১০৫ ক্যালরি পাওয়া যায়। তা ছাড়া কলা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। যা থেকে চর্বি সঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

আরও পড়ুনএই ৫ কৌশলে কলা দিনের পর দিন ভালো থাকবে২৪ অক্টোবর ২০২৪আম

‘ফলের রাজা’ আমে যেমন আছে প্রাকৃতিক শর্করা, তেমনি আছে ক্যালরি। মাঝারি আকারের একটি আমে ১৫০-২০০ ক্যালরি থাকে। যে কারণে আম উচ্চশক্তির ফল হিসেবেও পরিচিত। তবে অতিরিক্ত আম খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকিও উপেক্ষা করা যায় না। কারণ, আমের শর্করার বেশির ভাগই ফ্রুক্টোজ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে চর্বি জমাতে পারে।

খেজুর

‘সুপারফুড’ হিসেবে খেজুরের নামডাক আছে। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক শর্করা ও ক্যালরির পরিমাণও এতে অনেক। খুব সুস্বাদু ও জনপ্রিয় একটি মেডজুল খেজুরে ৬৬-৭০ ক্যালরি থাকে। সে হিসাবে একবারে পাঁচ-ছয়টি খেজুর খেলে ৪০০ ক্যালরি পাওয়া যায়। যেখানে ৭০ শতাংশ চিনি, প্রাথমিকভাবে ফ্রুক্টোজ। আর এটি শরীরের বিভিন্ন কাজে ব্যায় না হলে চর্বি হিসেবে সঞ্চিত হতে পারে। তা ছাড়া উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচকভুক্ত হওয়ায় এর শর্করা দ্রুত রক্তে মিশে গিয়ে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। একইভাবে প্রোটিন ও ফাইবারের ভারসাম্য ব্যাহত হলে ওজনও বাড়াতে পারে।

আরও পড়ুনপেট ফাঁপা কমাতে যে ৫টি ফল খাবেন০৭ জানুয়ারি ২০২৫আঙুর

প্রতি কাপ আঙুরে ১৫-২০ গ্রাম চিনি থাকে। তা ছাড়া প্রাকৃতিক শর্করার পরিমাণও আঙুরে বেশি। তাই অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি চর্বি জমা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মনে রাখবেন, এক কাপ আঙুরে থাকে ৬০-৭০ ক্যালরি।

সূত্র: ওয়েব এমডি

আরও পড়ুনকিডনি সুস্থ রাখতে চাইলে এই ৭ ফল খান১১ নভেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য

কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।

মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।

দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।

লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।

দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।

জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।

রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।

দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ