মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী বাসের ছাদ উড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি বেপরোয়াভাবে প্রায় ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে যান চালক। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসটির অজ্ঞাতনামা চালক, চালকের সহকারী, মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বাসচালকের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

শ্রীনগরের হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুর্ঘটনাকবলিত বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসটি বর্তমানে হাইওয়ে থানায় রয়েছে। দুর্ঘটনায় শাহীন (৩২) নামে বরিশালের নলছিটি এলাকার এক ব্যক্তি আহত হন।

মামলার এজাহার, হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে বাসটি ছাড়ে। ঘণ্টাখানেকের পর ওই বাসটি ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। বাসটি শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তখনই বাসের ছাদ সামনে থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে থাকে। চালক বাসটি না থামিয়ে আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। পরে ওই বাসটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সমষপুরে গেলে ছাদটি উড়ে পড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয়। যাত্রীসহ ছাদবিহীন বাস চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। সমষপুর অতিক্রম করে আরও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি।

বাসে থাকা যাত্রীরা তখন ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করতে থাকেন। বেপরোয়া চালক সেদিকে কর্ণপাত না করে ঘটনাস্থল থেকে আরও ৬ কিলোমিটার দূরত্বে লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার অভ্যন্তরীণ একটি সড়কে নিয়ে যান ছাদবিহীন বাসটিকে। রাত ১০টার দিকে যাত্রীদের চিৎকার শুনে বাসটি ঘেরাও করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ সড়কের অন্য অংশে টহলে ছিল। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পদ্মা উত্তর থানা–পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও যান। ঘটনাস্থল থেকে শাহীন নামে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো করা হয়। ঘটনার পরপর চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি চালকের অবহেলার জন্য হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীনগর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন শ র নগর ঘটন য় হ ইওয়

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ