বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার দিনভর বসেছিল তারার মেলা। অভিনয়শিল্পীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল পরিবেশ। উপলক্ষ– টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন। নির্বাচনের জন্য বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। মাঝে কিছুটা সময় ছিল বিরতি।

ত্রিবার্ষিক এই নির্বাচনে ২১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন ৪০ জন প্রার্থী। ভোটারসংখ্যা ৬৯৯। নবীন ও খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি সংবাদকর্মী ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই এসেছিলেন নির্বাচন দেখতে।

সবার মাঝেই কৌতূহল; কে জিতবেন কে হারবেন– তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার যেন শেষ ছিল না। ভোট দিয়ে দায়িত্ব শেষ, এমন মানসিকতা ছিল না কারও মধ্যে। বরং ভোট দেওয়ার পর দল বেঁধে শিল্পীদের আড্ডা দেওয়া ও গল্পের আসর বসাতে দেখা গেছে। এবারের নির্বাচনে ফল যা-ই হোক, ভোটার আর প্রার্থীর মিলনমেলা স্মরণীয় হয়ে থাকবে– এমন কথাও শোনা গেছে অনেকের মুখে।

দুপুরের পরই ভোটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ভোট দিতে আসা তারকা অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘এবারেরর নির্বাচনের পরিবেশটা একটু অন্যরকম। প্রতিবারের চেয়ে আলাদা। আমরা যারা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাদের একটি বিশেষ দিন আজ। এখানে অনেকেই আমার খুব প্রিয়। কাকে রেখে কাকে ভোট দেব– ভাবনায় পড়ে যাই।’

অভিনয়শিল্পী সংঘ একটি জায়গায় পৌঁছেছে। আগামীতে আরও উন্নত জায়গায় পৌঁছুক– এটিই তিনি চাইছিলেন। এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন নরেশ ভূঁইয়া ও ফারুক আহমেদ।

নরেশ ভূঁইয়া বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল, প্রার্থীরা সবাই বলছেন নির্বাচন একটি প্রক্রিয়া, এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে আনন্দ নিয়ে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।’

এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়েছেন অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম ও আবদুল্লাহ রানা। সহসভাপতি প্রার্থী ছয়জন। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়েছেন অভিনেতা শাহেদ শরীফ খান ও অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। অর্থ সম্পাদক ও দপ্তর সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন যথাক্রমে নূর এ আলম নয়ন ও তানভীর মাসুদ। 

অনুষ্ঠান সম্পাদক পদে লড়েছেন তিনজন। আইন ও কল্যাণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন দু’জন।  প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। 

কার্যনির্বাহী পরিষদের সাতটি সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত [সন্ধ্যা ৭টা] ভোট গণনা চলছিল।

অভিনয়শিল্পী সংঘের বর্তমান সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম ও সম্পাদক রওনক হাসান এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম লনম ল পর ব শ হয় ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার