রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির সক্রিয় কর্মী লাভলু মিয়া হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধন চলাকালে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের কেউ কেউ বদরগঞ্জ-রংপুর সড়কে শুয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা মামলার অন্যতম আসামি স্থানীয় কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল হক ওরফে মানিককে অপসারণের দাবিতে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও মো.

মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে স্মারকলিপি পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের একটি টিনের দোকানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপির কর্মী লাভলু মিয়া (৫২) নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে রায়হান কবির বাদী হয়ে পরদিন স্থানীয় কালুপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল হকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মোরছালিন হোসেন নামের একজন ছাড়া এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ওই আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ৮ এপ্রিল থেকে বদরগঞ্জে নিয়মিত আন্দোলন করে আসছেন উপজেলা বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। বদরগঞ্জ শহীদ মিনারের পাশে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত চলা আজকের কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির সাবেক নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, নিহত লাভলুর স্ত্রী রায়হানা বেগম, মেয়ে লাবনী আক্তার, সাবেক বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা আবুজর গেফারী, বিএনপি নেতা সুমন মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম প্রমুখ।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৫ এপ্রিল প্রকাশ্য দিবালোকে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হকের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপির কর্মী লাভলু মিয়াকে। পুলিশ রহস্যজনক কারণে মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল আমিন সরকার বলেন, হত্যা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামিসহ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মূল আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর বদরগঞ জ ব এনপ র র কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন

নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা অনুষ্ঠানে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে জড়িয়ে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের বড়বাজার এলাকায় ‘সচেতন আলেম ও ছাত্র–জনতা’র ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়।

খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী মুহাম্মাদ আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন খান, হেফাজতে ইসলামের সদস্যসচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা আতাউর রহমান, ওলামা দলের নেতা হাফেজ মিসবাহুদ্দিন তালুকদার, খেলাফত যুব আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মুসা শেখ, খেলাফত মজলিসের নেতা মুফতি মো. আব্দুল্লাহ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেহরুল আলম, খেলাফত আন্দোলনের নেতা মাওলানা জাকির হোসেন, ছাত্রনেতা মাওলানা বীন ইয়ামিন, মাওলানা আবরার ফাহাদ, মাওলানা মোতালিব খান, হাফেজ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুনযদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন: নেত্রকোনায় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী২৭ জুলাই ২০২৫

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোনা–৪ (মদন–মোহনগঞ্জ–খালিয়াজুরি) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিএনপি সরকারের আমলে সফল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তিনি দলমত–নির্বিশেষে নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও জেলার বহু বেকার তরুণ–তরুণীদের চাকরি দেওয়াসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন। তাঁকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় নেত্রকোনার জনগণ মর্মাহত হয়েছেন। এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে তাঁর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

গত রোববার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি’র অংশ হিসেবে পথসভা করা হয়। অনুষ্ঠানে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বড় একটি ঘটনা হলো, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, তবে নিয়ে আসছিলেন কেন আপনি? আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় এই অস্ত্রকাহিনির কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘আমি বাবর ভাইকে (সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর) সম্মান করি, তিনি কারা নির্যাতিত নেতা। কিন্তু আপনার ওই কাজ আমি সমর্থন করি না, করি না, করি না। আপনার এই কাজের কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। হাসিনার মতো একজন খুনি ও ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছিলেন।’ এ নিয়ে ২৭ জুলাই প্রথম আলোর অনলাইনে ‘যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির সাবেক নেতার হুমকি, সরিয়ে ফেলা পোস্টার ইউএনওকেই লাগাতে হবে
  • ফেস্টুন অপসারণ করায় ইউএনওকে শাসালেন বিএনপি নেতা 
  • মেঘনায় নদীতে অবৈধ বালু তোলায় ব্যবহৃত ৭টি খননযন্ত্র ও ১টি বাল্কহেড জব্দ
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন