যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ২ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
Published: 25th, April 2025 GMT
গাজায় আজ শুক্রবার ভোর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজার উত্তরের জাবালিয়ায় হামলায় একই পরিবারের ১২ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স ও চিকিৎসকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এ বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে নৃশংস ও নির্বিচার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন।
আরও পড়ুনগাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব, মেয়াদ কয় বছর, বাকি শর্ত কী২২ এপ্রিল ২০২৫যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে হামলায় ইসরায়েল অধিক শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, এ কারণে গাজায় যুদ্ধবিরতির আগের তুলনায় বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। উপত্যকাটিতে এখন যুদ্ধবিরতির আগের তুলনায় চার গুণ বেশি সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছা করেই গাজায় হামলা চালাতে অধিক শক্তিশালী বোমার ব্যবহার করেছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, ইসরায়েল খুব সম্ভবত ইচ্ছা করে গাজায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও ধ্বংস নিশ্চিত করতে চাইছে।
আরও পড়ুনফিলিস্তিনি ও ত্রাণকর্মীদের জন্য গাজা এখন ‘গণকবর’: এমএসএফ১৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।