লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আওতাধীন লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালুখেকোদের ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই। পাহাড়ঘেঁষে সাতগরিয়া ছড়ায় শ্যালোমেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে পাহাড় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, বালুখেকোদের হাত অনেক লম্বা; তাই তাদের কেউ ঠেকাতে পারছেন না।
গত বৃহস্পতিবার এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ে ক্ষতচিহ্ন দেখে আঁতকে ওঠেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিদর্শনে যান। তিনি পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষক অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক সানাহ উল্লাহ পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিএফও মোল্যা রেজাউল করিম, কক্সবাজার উত্তরের ডিএফও মারুফ হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ, উপকূলীয় বনবিভাগ চট্টগ্রামের ডিএফও বেলায়েত হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ আতিকুল ইসলাম,  সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী জীববৈচিত্র্যের সহকারী বন সংরক্ষক নূর জাহান।
২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালের শেষ পাতায় ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটারজুড়ে ক্ষতচিহ্ন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদে টনক নড়ে প্রশাসনের। কাঁটা তার দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয় বনবিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একদল দুর্বৃত্ত কাঁটা তার তুলে আবারও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। 
জানা যায়, উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাতগড় লম্বাশিয়া এলাকায় পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় আয়াস ও আবুর নেতৃত্বে একদল বালুখেকো। ওই স্থানটি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বনবিটের আওতাধীন।
স্থানীয়রা জানান, নির্বিচারে বালু তোলার কারণে এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সংরক্ষিত বন মানে শুধু গাছ নয়; এটি এলাকার জলবায়ু, প্রাকৃতিক ভারসাম্য, বন্যপ্রাণী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার প্রতীক। যদি এখনই এ ধ্বংসযজ্ঞ থামানো না যায়, তবে  ভবিষ্যতে সবুজ পাহাড় আর থাকবে না।
জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে ওই এলাকা থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় একটি মহল পাহাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। দফায় দফায় অভিযানের পরও স্থায়ীভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন। গত ৬ আগস্ট দৈনিক সমকালে ‘বালু উত্তোলনে ক্ষতবিক্ষত চুনতির লম্বাশিয়া পাহাড়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকে আবার বালু উত্তোলনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। আগেও সংবাদের সূত্র ধরে, ২০২৩ সালের ২৪ নভেম্বর ওই এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালায়। ১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করে। ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি বালুবাহী গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরি করা রাস্তার একাধিক স্থান কেটে দিয়ে লম্বাশিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন বন্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয় উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ। কয়েক মাস বালু উত্তোলন বন্ধও ছিল। তখন বন ফিরে পেয়েছিল প্রাণ। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে একটি মহল কাটা রাস্তা মেরামত করে পুনরায় ওই স্থান থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। গত ২০ মার্চ ওই এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেয় পাহাড় কাটা বালু উত্তোলন। এ সময় কাটা হয়েছিল বালু পরিবহনের ৫টি রাস্তা। অভিযানের পর কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও কেটে দেওয়া রাস্তা আবার সংস্কার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর একই স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গভীর গর্তের পানিতে পড়ে মারা যায় একটি বন্যহাতি। ইতোমধ্যে বালুখেকোরা বেশ কয়েকটি পাহাড় ও টিলা সাবাড় করে দিয়েছে। বালুখেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।
স্থানীয় লোকজন জানান, একসময় লম্বাশিয়া পাহাড় ছিল সবুজে ঘেরা, বন্যপ্রাণীতে পরিপূর্ণ এক প্রাকৃতিক আশ্রয়স্থল। আজ সেখানে শোনা যায় শুধু ডাম্প ট্রাকের গর্জন আর পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন যন্ত্রের কানফাটা আওয়াজ। এ যেন সংরক্ষিত বনে চলছে পাহাড় ধ্বংসের প্রতিযোগিতা। প্রকৃতির নিস্তব্ধতা প্রতিদিন রক্তাক্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মাঝেমধ্যে অভিযানে গেলেও তা লোক দেখানো ছাড়া কিছুই না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অভিযানের পর কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে, আবার চালু হয়। কিন্তু জড়িতরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। লম্বাশিয়ায় পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে না পারার ব্যর্থতার দায় কে নেবে এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের। তাদর কথা, তাহলে বালুখেকোরা কি প্রশাসনের চেয়ে শক্তিশালী? ওই স্থানটি বর্তমানে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলেও পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড় কেটে একাধিক শ্যালোমেশিন বসিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। ধ্বংস করা হচ্ছে পাহাড় ও গাছপালা। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক। বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বিলীন হয়ে যাবে লম্বাশিয়ার সব পাহাড়। আবাসস্থল হারাচ্ছে বন্যপ্রাণী। বিনষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। 
সংরক্ষিত বনে নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে মানবিক ও পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটছে। এলাকার নিচে নামছে পানির স্তুর। বেড়েছে ভূমি ক্ষয় ও ধসের ঝুঁকি। শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। আবহাওয়া হয়ে উঠেছে শুষ্ক ও অস্বাভাবিক, ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল, বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তন ও খরা প্রবণতা। বর্ষাকালে বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে, হারিয়ে যাচ্ছে জলাধার ও খাবারের উৎস। খাদ্য সংকটে বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাহাড় কেটে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি উজাড় করা হচ্ছে বনের গাছ। বন দখল করে গড়ে উঠেছে বসতি। বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয় এখন হয়ে উঠেছে মানুষের লোভের লীলাভূমি। বন আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। পাহাড়ের কান্না শুনতে পান না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সংরক্ষিত বন যেন এখন কেবল ‘নাম সংরক্ষিত’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকৃতি বারবার ডাকছে ‘আমাকে রক্ষা করো, নয়তো একদিন তোমরাও রক্ষা পাবে না’।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন ফয়সল বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের যৌথ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করা হলে তারাও অভিযানে অংশগ্রহণ করবেন। ২০২৩ সালে লম্বাশিয়ায় পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলাও করেছে। সামনেও অভিযান চালানো হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবীর ফাহাদ বলেন, ‘লম্বাশিয়ায় পাহাড় কেটে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কিছুদিন পরপর অভিযান পরিচালনা করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। বনবিভাগের অনেক কাজ, শুধু লম্বাশিয়া নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। এদিকে রয়েছে জনবল সংকটও।’ অপ্রতিরোধ্য বালু সিন্ডিকেট একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করার ব্যাপারে জানতে চাইলে সংবাদকর্মীদের কাছ থেকেই উল্টো এর সমাধান চান ওই কর্মকর্তা।
লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) 


নাজমুন লায়েল বলেন, লম্বাশিয়ায় সংরক্ষিত বনে পাহাড় কেটে বালু উত্তোলন বন্ধে বনবিভাগকে সাথে নিয়ে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানের পর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পুণরায় বালু উত্তোলন শুরু করা হয়। বনবিভাগ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করলে লম্বাশিয়া এলাকায় একটি পাহাড়ও রক্ষা করা যাবে না। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পুণরায় অভিযান পরিচালনা করা হবে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বনব ভ গ র কর মকর ত ২০২৩ স ন বন ধ এল ক য় হ ম মদ র চ নত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র‌্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।

আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।

আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩

কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা
  • গাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়ালো
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
  • আলোচিত ষোড়শী আইনার পারিশ্রমিক কত?
  • গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: বলছে ইসরায়েলভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংস্থা
  • পৃথিবী থেকে ৩৭ কোটি মাইল দূরে থাকা মহাকাশযানের ক্যামেরা যেভাবে মেরামত করেছে নাসা